পাটিয়ালা: ১৬ বছরের যে কোনও মুসলিম মেয়ের মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহ যোগ্য। তারা নিজের ইচ্ছায় বিবাহ করলে সেই বিবাহ বৈধ বলেই ধরা হবে। সম্প্রতি একটি মামলার প্রেক্ষিতে বাল্যবিবাহের পক্ষে এমনই রায় দিল পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টের একক বেঞ্চ। সম্প্রতি বিচারপতির জশজিৎ সিং বেদির একটি বেঞ্চ ১৬ বছর বয়সী এক মুসলিম কন্যার আবেদনের প্রেক্ষিতে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এমন রায় দিয়েছে বলে খবর।
জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি ১৬ বছর বয়সী এক মুসলিম তরুণী এবং তার ২১ বছর বয়সী স্বামী নিজেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আদালতের দ্বারস্থ হন। তাদের দাবি, মুসলিম রীতিনীতি মেনে গত ৮ জুন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন ওই তরুণ-তরুণী। কিন্তু দুই পরিবারের কোনও সদস্যই এই বিবাহকে মান্যতা দিতে রাজি নন। উল্টে দুই পরিবারের তরফ থেকেই একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন তারা। আর তাই নিজেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে তারা আদালতের দ্বারস্থ হন। তাদের পিটিশনে বলা হয়েছে, মুসলিম নিয়ম অনুযায়ী বয়সন্ধি পেরোনোর পর যে কোনও মুসলিম ছেলে হোক কিংবা মেয়ে নিজের পছন্দের সঙ্গীকে বিয়ে করতে পারেন৷ এই বিষয়ে পরিবারের কারোর হস্তক্ষেপের কোন জায়গা নেই। জানা যাচ্ছে, আবেদনকারীর এই পেটিশনের পক্ষেই সম্প্রতি রায়দান করেছেন পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার হাইকোর্টের বিচারপতির একক বেঞ্চ।
হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের তরফ থেকে সম্প্রতি স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘আবেদনকারী স্ত্রীর বয়স ১৬ বছর। মুসলিম আইন অনুযায়ী তিনি বিবাহযোগ্য। আর, আবেদনকারী স্বামীর বয়স ২১। তিনিও মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহযোগ্য। তাই এই বিয়ে বৈধ। আবেদনকারীরা শুধুমাত্র তাঁদের পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করেছেন বলে ভারতীয় সংবিধান বর্ণিত মৌলিক অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করা যায় না কখনই।’
এদিন রায় ঘোষণার সময় বিচারপতি বিশেষভাবে শরিয়ত আইনের উল্লেখ করেন। ‘প্রিন্সিপলস্ অব মহামেডান ল’ বইয়ের ১৯৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে, ১৬ বছরের বেশি বয়সী মেয়ে তাঁর পছন্দের ব্যক্তিকে বিয়ে করতে পারেন। অন্যদিকে পাত্রের বয়স যেহেতু ২১ বছরের বেশি, তাই সেদিক থেকে দেশের আইন অনুসারেই তিনি বিবাহযোগ্য। বিয়ের মান্যতা দেওয়ার পাশাপাশি এদিন আদালত পাঠানকোট পুলিশ সুপারকে ওই মুসলিম দম্পতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছে।