দোভালের কূটনৈতিক চালে কাটল জট! অবশেষে পিছু হঠল চিনা ফৌজ

দোভালের কূটনৈতিক চালে কাটল জট! অবশেষে পিছু হঠল চিনা ফৌজ

 

নয়াদিল্লি: গত দু’মাস ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ক্রমাগত চড়ছিল উত্তেজনার পারদ৷ ভারত-চিন কোর কমান্ডার পর্যায়ে একাধিক বৈঠকেও মেলেনি সুরাহা৷ নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিল দু’দেশের সেনাবাহিনী৷ অবশেষে ময়দানে নামলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল৷ দীর্ঘ আলোচনার পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে ২ কিলোমিটার পিছু হঠল চিনের লাল ফৌজ৷ সামরিক ভাষায় যাকে বলা হচ্ছে ‘ডিসএনগেজমেন্ট’৷  

জানা গিয়েছে, রবিবার সীমান্ত ইস্যুতে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে টানা ২ ঘণ্টা ভিডিও কলে কথা বলেন অজিত দোভাল৷ বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারত-চিন সীমান্তে সাম্প্রতিকতম পরিস্থিতি নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করেন দোভাল ও ওয়াং ই৷ এর পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থা ও শান্তি ফেরাতে সম্মতি জানায় দু’পক্ষই৷ ভবিষ্যতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে দু’দেশ একসঙ্গে পদক্ষেপ করবে বলেও সহমত জানিয়েছে৷ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়েও একমত হয়েছেন তাঁরা৷ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিকাশের জন্য যা অত্যন্ত জরুরি৷

চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে দোভালের বৈঠকের পরেই পিছু হটে চিনা সেনা৷ সরে আসে ভারতীয় জওয়ানরাও৷ জানানো হয় যে, সীমান্তে শান্তি বিঘ্নিত হয়, এমনই কোনও কাজ করবে না কোনও পক্ষই৷ এমনকী গালওয়ানে স্থায়ী নির্মাণ ভাঙার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে চিন৷ অন্যদিকে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সোমবারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে,  ‘‘উত্তেজনা প্রশমন এবং ডিসএনগেজমেন্টের লক্ষ্যে অগ্রবর্তী চিনা বাহিনী কার্যকরী পদক্ষেপ শুরু করেছে।’’

গত মে মাসে পূর্ব লাদাখের  সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভূ-খণ্ডে ঢুকে পড়েছিল চিনা ফৌজ৷ একাধিকবার ডিভিশন কমান্ডার স্তরের বৈঠকেও সমস্যা মেটেনি৷৬ জুন কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেনা সরিয়ে নেবে চিন৷ কিন্তু সে কথা রাখেনি তারা৷ এরপর গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় দু’দেশের সেনার মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়৷ মৃত্যু হয় ২০ ভারতীয় জওয়ানের৷ রবিবার ওয়াই-এর সঙ্গে দোভালের টেলিফোনিক আলোচনার পর শুরু হয় ‘চোখে-চোখ’ অবস্থানে থাকা দুই সেনার ‘ডিসএনগেজমেন্ট’ প্রক্রিয়া। পাশাপাশি, অজিত ডোভাল-ওয়াং ই বৈঠকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা-র প্রতি সম্মান প্রদর্শন, শান্তি ও সুস্থিতি বজার রাখা এবং একতরফা পদক্ষেপ না করার বিষয়ে সহমত হয়েছেন দু’জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three + 20 =