‘নারীদের দুর্গার মতো সম্মান করতে হবে’! বোধনে নারীশক্তির জয়গান মোদীর

‘নারীদের দুর্গার মতো সম্মান করতে হবে’! বোধনে নারীশক্তির জয়গান মোদীর

নয়াদিল্লি: মহাষষ্ঠীর সকালে ভার্চুয়াল বক্তৃতায় বঙ্গবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কলকাতার একটি পুজোর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ পাশাপাশি শক্তির আরাধিতা দেবীর পুজোর প্রথম দিনে নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে সওয়াল করলেন তিনি৷

দিন কয়েক আগে দেশবাসীর উদ্দ্যেশে বক্তব্য দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নবরাত্রির মতো উৎসবের নাম করলেও বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উরসব দুর্গাপুজো নিয়ে টুঁ শব্দটি করেননি দেশের প্রধান প্রশাসক৷ তা নিয়ে একাংশের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল৷ বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সে কলকাতায় বিজেপির উদ্যোগে আয়োজিত একটি পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন করে বঙ্গবাসীকে পুজোর শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী৷ পুজোর শুভেচ্ছা ভাষণে এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘‘দুর্গাপুজো এমন একটি উৎসব, যারমধ্যে দিয়ে ভারতের ঐক্য ও শক্তি প্রতিফলিত হয়। একইসঙ্গে বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যও ফুটে ওঠে৷’’ 

তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোভিডের সময়ে দুর্গোৎসব পালন করছি, ভক্তরা অসাধারণ নিয়মের পরিচয় দিয়েছেন। লোকজন কম হতে পারে, তবে ভক্তি ও বিশ্বাস অটুট রয়েছে। খুশি ও আনন্দ এখনও লাগামছাড়া। এটাই আসল বাংলা৷’’ এরপরেই নারীশক্তির জয়গান করেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকারের চালু করা উজ্জ্বলা প্রকল্প থেকে শুরু করে, স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যেক বাড়িতে শৌচালয় তৈরি করা, জনধন যোজনার মাধ্যমে সবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা, কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের সমান অধিকারের মতো প্রকল্প, গর্ভবতী মহিলাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য দেওয়া রেশনের কথা তুলে ধরেন তিনি৷ একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের সবচেয়ে বেশি চর্চিত বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্পের কথাও তুলে ধরেন দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসক। তিনি বলেন, “মহিলারা মা দুর্গার প্রতীক, বিভিন্ন নীতি এবং প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা মহিলাদের ক্ষমতায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি৷’’

তবে চমকের বাকি ছিল আরও। এদিনের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন বাংলায় দুর্গা পুজোর সংস্কৃতি নিয়ে। শক্তির আরাধিতা দেবীকে ঘরের মেয়ে হিসেবে যত্ন, আদর করার কথা তুরার পাশাপাশি বাঙালির চিরকালের প্রার্থনার কথা তুলে ধরেন তিনি৷ রায়গুণাকর ভারতচন্দ্রের লেখা অন্নদামঙ্গল থেকে ঈশ্বরী পাটনীর  ‘আমার সন্তান যেন দুধে ভাতে’র কথা বাংলায় আবৃত্তি করলেন নরেন্দ্র মোদী৷ কখনও তুলে ধরলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলার মাটি, বাংলার জল৷

দেশের অগ্রগতিতে বাঙালির ভূমিকা সম্পর্কেও বেশ কিছুটা সময় ব্যয় করলেন নরেন্দ্র মোদি। সাহিত্যসংস্কৃতিতে বাহালীর অবদান নিয়ে বলতে গিয়ে তুলে ধরলেন সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর প্রসঙ্গ। একইসঙ্গে বললেন, দিন শেষ গেলেও, দেশের অগ্রগতিতে বাঙালীর ভূমিকার কথা বলা শেষ হবে না। এদিনের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকার পূর্ব ভারতের উন্নয়নে বিশেষভাবে সচেষ্ট। আর এক্ষেত্রে বাংলার বিশেষ অবদান থাকবে এবং পূর্ব বারতের উন্নয়ন বা এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ নেতৃত্ব দেবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী। উৎসবের আবহে যেন করোনা পরিস্থিতির কথা কেউ ভুলে না যান, সেকথাও স্মরণ করে দেন নরেন্দ্র মোদি। সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উরসবে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 4 =