নয়াদিল্লি: এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দেশের সম্মান রক্ষায় নিজেকে উজার করে বিশ্রামে চলল বিরাট৷ প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজই ছিল তার কর্মজীবনের শেষ দিন৷ রাষ্ট্রপতির লিমুজিনের পাশে আর দেখা যাবে না তাকে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ পিঠ চাপড়ে বিদায় জানাল তাকে৷ বিরাট ফিরল আস্তাবলে৷ এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকল রাজধানীর রাজপথ৷
রাষ্ট্রপতির দেহরক্ষীবাহিনী (পিজিবি)-র কাছে প্রায় ২০০টি কুলিন ঘোড়া রয়েছে৷ তার মধ্যে অন্যতম সেরা বিরাট৷ বলা যায় সে ছিল ঘোড়াদের ক্যাপ্টেন৷ বিরাট ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাচীনতম রেজিমেন্টের গর্ব৷ অন্যান্য ঘোড়ার চেয়ে বিরাটের পার্থক্য তার গঠন আর চেহারার ঔজ্জ্বল্যে৷ স্বভাবে শান্ত বিরাট এক যুগ ধরে প্রজাতন্ত্র দিবসে রাষ্ট্রপতির কনভয়ের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছে।
২০০৩ সালে মাত্র ৩ বছর বয়সে রাষ্ট্রপতির দেহরক্ষীর কুলিন পরিবারে অন্তর্ভুক্ত হয় হ্যানোভারিয়ান প্রজাতির বাদামি রঙের তেজিয়ান বিরাট। তবে থেকে আজ পর্যন্ত নিরন্তর নিজের দায়িত্ব পালন করে এসেছে সে৷ আজ বিদায়বেলায় তাকে পিঠ চাপড়ে সাবাসি দেন প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি৷ সঙ্গে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও৷ আজ বিরাটে সওয়াল হয়েছিলেন পিবিজি-র কর্নেল অনুপ তিওয়ারি। তিনিই রাজপথ পেরিয়ে বিরাটকে পৌঁছে দেয় আস্তাবলে৷
President’s Bodyguard horse Virat retires from service today. It was given the Chief of the Army Staff Commendation Medal this year.
President Kovind, PM Modi and Defence Minister Rajnath Singh bid him farewell on the occasion
(Pic source: President of India) pic.twitter.com/L7G2OTpJJn
— ANI (@ANI) January 26, 2022
দায়িত্বে থাকা সেনাদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে রাজপথে বিপুল উল্লাসের মধ্যেও তাঁর আরোহীর ক্ষীণতম ফিসফিস শব্দ শোনার ক্ষমতা তাঁকে সবচেয়ে বিশ্বস্ত ঘোড়া করে তুলেছিল। দূর থেকে বন্দুকের আওয়াজ বা ব্যান্ডে জাতীয় সঙ্গীত কোনও কিছুই তার কান এড়াত না৷ সে ছিল নির্ভিক৷ ধীর, স্থির, শান্ত স্বভাব অথচ কর্তব্যে অবিচল। অসংখ্য দর্শকরে মাঝেও তাঁর আত্মবিশ্বাস বারবার প্রকট হয়েছে৷ তাকে নিয়ে তাই আগ্রহেরও সীমা নেই৷
গত সপ্তাহেই বিরাটকে সিওএএস কম্যান্ডেশন কার্ড দিয়েছিলেন সেনা প্রধান নারাভানে। ২০০৭ সালে ফরিয়াদের পরে বিরাটই দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতির দেহরক্ষী ঘোড়া, যাকে এই সম্মান দেওয়া হয়েছে। অবসর নিলেও বিরাট পেনশন পাবে৷ তার বাকি জীবন কাটবে সেবাহিনীর তত্ত্বাবধানেই৷