নয়াদিল্লি: ৭৪ তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক সন্ধ্যায় জাতীয় উদ্দেশে ভাষণ দিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ৷ স্বাধীনতার প্রাক্কালে দেশের মানুষ এবং বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের স্বাধীনতা দিবসের অভিনন্দন জানান তিনি৷ রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীন ভারতের নাগরিক হিসেবে যুবকদের বিশেষভাবে গর্বিত হওয়া উচিত। বীর সেনাদের বলিদানকে আমরা কর্তব্যের সঙ্গে স্মরণ করি৷ তাঁদের বলিদানের জন্যই আজ আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক৷ স্বাধীনতা সংগ্রামের আদর্শের ভিত্তিতেই আধুনিক ভারতের নির্মাণ হচ্ছে৷
আরও পড়ুন- স্বাধীনতা দিবসেই হতে পারে ‘এক দেশ, এক স্বাস্থ্য পরিষেবা’র ঘোষণা, তুঙ্গে প্রস্তুতি
রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে বলেন, এই বছরের স্বাধীনতা দিবস প্রতি বছরের মতো ধূমধামের সঙ্গে পালিত হবে না৷ কারণ সারা বিশ্ব করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছে৷ এই অতিমারি আমাদের সকলের জীবন বদলে দিয়েছে৷ তবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র৷ যার জেরেই আজ করোনার মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে৷ রাজ্য সরকারগুলিও কাজের প্রশংসাও করেছেন তিনি৷ সম্মান জানিয়েছেন কোভিড যোদ্ধাদের৷
তিনি বলেন, কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশার উপর আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় আম্পান৷ যা আমাদের পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তোলে৷ এই সংকট মোকাবিলায় সকলে একজোট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে৷
আরও পড়ুন- স্বাধীনতা দিবসে জওয়ানরা পাবেন নয়া ক্রেডিট কার্ড, কী সুবিধা আছে জানেন?
এই অতিমারিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছেন দেশের দরিদ্র ও দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ৷ এই সকল দরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার মতো একাধিক জনকল্যাণকারী প্রকল্প আনা হয়েছে৷ কোনও মানুষ যাতে খালি পেটে না থাকে তার জন্য বিনা পয়সায় রেশন দেওয়া হচ্ছে৷ এক দেশ এক রেশনকার্ড চালু করা হয়েছে৷
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়া ভারতীয়দের ‘বন্দে ভারত’ প্রকল্পে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে৷ প্রায় দশ লক্ষ মানুষকে ফেরানো হয়েছে৷ কোভিড মোকাবিলায় অন্য দেশের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত৷ তিনি আরও একবার মনে করিয়ে দেন, আত্মনির্ভর ভারতের অর্থ স্বনির্ভর হওয়া বিশ্ব থেকে দূরত্ব তৈরি করা নয়৷
আরও পড়ুন- ব্যর্থ বিজেপি’র প্রচেষ্টা, আস্থাভোটে জয়ী গহলটের ককপিটে ফের পাইলট
চিনের নাম না করেই এদিন কড়া বার্তা দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ৷ তিনি বলেন, ‘অশান্তি তৈরির চেষ্টা হলে জবাব দেবে ভারত।’ তিনি বলেন, সমগ্র বিশ্বের সামনে আজ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উপস্থিত হয়েছে। জোটবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ তাদের বিস্তারবাদী গতিবিধিকে চালাকির সঙ্গে পরিণতি দেওয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছে৷ দেশের সীমান্ত রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয়েছে আমাদের সেনা জওয়ানদের৷ ভারত মাতার এই সুসন্তানরা দেশের গৌরবের জন্য বেঁচেছে, দেশের জন্যই মৃত্যু বরণ করেছে৷ সমগ্র দেশ গালওয়ান উপত্যকায় এই আত্মবলিদানকে কুর্ণিশ করছে। তাঁদের শৌর্য্য দেখিয়ে দিয়েছে যে, ভারত শান্তির প্রতি আস্থাশীল হলেও কেউ অশান্তি তৈরির চেষ্টা করলে তার উপযুক্ত জবাব দিতেও প্রস্তুত৷ দেশের সশস্ত্র বাহিনী, আধা সামরিক বাহিনীর জন্য আমরা গর্বিত। তাঁরা আমাদের সীমান্তের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অতন্দ্র প্রহরী। তাঁরা সীমান্ত সুরক্ষার মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুুন- স্বাধীনতা দিবসের আগেই রাম মন্দিরের ভূমিপুজো, মোদিকে আমন্ত্রণ
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে কৃষক ও ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থ ব্যবস্থায় ব্যপক পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ নতুন শিক্ষানীতিতে ভারতের একতা আরও জোরদার হবে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণে উঠে এসেছে অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের প্রসঙ্গও৷ তিনি বলেন, ‘১০দিন আগে অযোধ্যায়র রাম মন্দির তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দেশের মানুষ শীর্ষ আদালতের বিচার সম্মানের সঙ্গে মেনে নিয়েছে। এতদিন ধরে ধৈর্য্য ধরেছিল দেশের মানুষ।’