লখনউ: মৃত্যুবার্ষিকীর ঠিক দুই দিন আগেই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ভারতরত্ন ওস্তাদ বিসমিল্লা খানের বাড়ির একাংশ৷ যে ঘরে বসে এক সময় তিনি রেওয়াজ করতেন, তা এখন ধ্বংসস্তুপ৷ জানা গিয়েছে, ওস্তাদ বিসমিল্লা খানের পরিবারের সদস্যরাই এই বাড়ি ভেঙেছেন৷ ওই জায়গায় কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স তৈরি করতে চাইছেন তাঁরা৷ এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান তাঁর তামাম ভক্তকুল থেকে শুরু করে শিল্পীমহল এবং রাজনৈতিক নেতারাও৷
আরও পড়ুন- কবে, কীভাবে পাওয়া যাবে দেশীয় ভ্যাকসিন? বড় ঘোষণা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
এক সময় বিদেশে থাকার প্রস্তাব ছিল তাঁর সামনে৷ কিন্তু ১৯৬৩ সালে হাদহা সরাইয়ের ভিক্ষমশাহ লেনের ধারে কেনা বাড়ি ছেড়ে যেতে চাননি তিনি৷ এই বাড়ির দোতালার ঘরে বসেই প্রতিদিন রেওয়াজ করতেন ওস্তাদ৷ তাঁর সানাইয়ে উঠত সুরের ঝঙ্কার৷ কিন্তু সেই ঘর আর নেই৷ ধুলোয় মিশে গিয়েছে৷ এই ঘটনার পরই টুইট করে ভারতরত্নের রেওয়াজ কক্ষ সংরক্ষণের আর্জি জানান সমাজবাদী পার্টি প্রধান তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব৷ তিনি লেখেন, সরকারের উচিত যে ঘরে বসে ওস্তাদ বিসমিল্লা খান রেওয়াজ করতেন, সেই ঘরটি সংরক্ষণ করা৷ তাঁর কথায়, ‘‘যে ঘরে বসে ভারতরত্ন ওস্তাদ বিসমিল্লা খান সুরবন্দনা করতেন, সেই ঘরে বিল্ডারদের হাতে যাওয়া থেকে রক্ষা করা উচিত সরকারের৷ যারা সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে রক্ষা করতে পারে না, ইতিহাসও তাদের মনে রাখে না৷’’
আরও পড়ুন- বন্দে ভারত এক্সপ্রেস থামিয়ে চিনকে ‘শিক্ষা’! বাতিল ৪৪টি রেকের দরপত্র
ওস্তাদের এক নাতি আফাক হায়দর জানান, তাঁর অপর এক নাতি চিত্তেন হুসেন এই বাড়িটিকে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছেন৷ তিনি এই বিল্ডিংয়ের নীচে দোকান করতে চান৷ তবে বাড়ি ভেঙে দোকান করার ঘোরতর বিরোধী ওস্তাদের দুই ছেলে করিম হুসেন এবং নাজিম হুসেন৷ এটি হেরিটেজ হিসাবে বাড়িটি সংরক্ষণ করা উচিত বলে মনে করেন হায়দারও৷ ওস্তাদের জেষ্ঠ্যপুত্র মেহতাব হুসেনের ছেলে হলেন চিত্তেন৷ তিনি চাইছেন এখানে কমার্শিয়াল বিল্ডিং হোক৷ এই বাড়িটে তাঁর বাবা মেহতাব হুসেনের নামে বলেও দাবি তাঁর৷
আরও পড়ুন- আর্থিক জটে জনতা, প্রধানমন্ত্রীর জন্য ভারতে আসছে বিলাসবহুল বিমান
২০০৬ সালে ওস্তাদ বিসমিল্লা খানের মৃত্যুর পর তাঁর শিষ্য ও ভক্তরা ওই বাড়িটিকে একটি মিউজিয়াম করার আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, উস্তাদের স্মরণে একটি সংগ্রহশালা তৈরি করে তাতে বিসমিল্লার বিভিন্ন স্মারক প্রদর্শিত হোক৷ হেরিটেজ তকমা পাক বিসমিল্লার ভিটে। কিন্তু ওই চাওয়াটুকুই সার, উত্তরপ্রদেশ সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকার কেউই এগিয়ে আসেনি। উলটে ভাঙা পড়ল বিসমিল্লা খানের রেওয়াজ ঘর।