বেহাল স্বাস্থ্য, ঝুড়িতে বসিয়ে হাসপাতালে আনা হল গর্ভবতী মহিলাকে

বেহাল স্বাস্থ্য, ঝুড়িতে বসিয়ে হাসপাতালে আনা হল গর্ভবতী মহিলাকে

রাইপুর: আরও একবার উঠে এল আমাদের দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উদাসীনতার করুন চিত্র৷ খবর দেওয়ার পরও এল না অ্যাম্বুলেন্স৷  প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করা গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল ঝুড়িতে বসিয়ে৷ ঘটনাটি ছত্তিশগড়ের৷ 

গত মঙ্গলবার ছত্তিশগড়ের কোন্দাগাঁওয়ের মোহনবেদা গ্রামে এক মহিলার প্রসব যন্ত্রণা ওঠে৷ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ১০২ নম্বরে ফোন করে ডাকা হয় অ্যাম্বুলেন্স৷ কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরও অ্যাম্বুলেন্স না আসায়, খবর দেওয়া হয় স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের৷ তাঁরা এসেই ওই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করেন৷  নিয়ে আসা হয় একটি ঝুড়ি! 

জানা গিয়েছে, ওই গ্রামটি খুবই প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত৷ সেখানে অ্যাম্বুলেন্স আসবেই বা কী করে? গড়ি চলাচলের রাস্তাই যে নেই৷ তাই বাধ্য হয়েই গ্রামের স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই মহিলাকে ঝুড়িতে বসিয়ে রওনা দেন হাসপাতালের উদ্দেশে৷ কাঁধে চাপিয়েই সেখানে নিয়ে আসা হয় তাঁকে৷ 

তবে এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন৷ কোন্দাগাঁও-এর চিফ মেডিকেল হেলথ অফিসার (সিএমএইচও) টিআই কানওয়ার জানান, গ্রামটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছতে পারেনি৷ পাকা রাস্তা না থাকায় ওই গ্রামে কোনও ভাবেই অ্যাম্বুলেন্স ঢোকা সম্ভব ছিল না৷  তিনি আরও জানান, জেলা হাসপাতালে ওই মহিলাকে নিয়ে আসার পর, সেখানেই প্রসব করানো হয় তাঁকে৷ প্রসবের পর মা ও বাচ্চা উভয়েই সুস্থ্য আছে বলেও জানান তিনি৷ 

এই ঘটনা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল গ্রামীণ ভারতের এক নির্মম চিত্র৷ এটা শুধু ছত্তিশগড়ের কাহিনী নয়৷ একাধিক রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা রীতিমতো উদ্বেগজনক৷ গত মাসে এমনই এক ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের নয়ডা৷ হাসপাতালের খোঁজে টানা ১৩ ঘণ্টা চক্কর কাটার পর অ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যু হয়েছিল ৮ মাসের এক গর্ভবতী মহিলার৷ ওই মহিলার পরিবার জানিয়েছিল, হন্যে হয়ে ঘুরেও কোনও হাসপাতালে একটি বেড পাননি তাঁরা৷ প্রায় আটটি হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিব তাঁকে৷ এর মধ্যে একটি আবার ছিল সরকারি হাসপাতাল৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × three =