নয়াদিল্লি: বিজেপি বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে ১০০ আসন পাবে না, যদি পায় তাহলে তিনি নিজের কাজ ছেড়ে দেবেন! এমন দাবী করে বাংলার রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। এখনো পর্যন্ত তিনি তাঁর মন্তব্যে অনড় এবং বিজেপি কী অঙ্কে নিজেদের খেলা সাজিয়েছে বাংলায়, সেটারও পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে দিলেন তিনি। প্রশান্ত কিশোর দাবি করলেন, বিজেপি মূলত পাঁচটি রণকৌশল সাজিয়েছে বাংলায় ভোটে লড়ার জন্য, তবে এবার সিডিউল কাস্ট ভোট অনেক বড় ফ্যাক্টর হবে বলে মনে করছেন তিনি। কারণ ভোট কুশলীর অভিমত, বাংলায় এর আগেও পরিচিতির রাজনীতি ছিল, কে কিভাবে সেটা নিয়ে খেলেছে, সবকিছু নির্ভর করেছে তার ওপর।
প্রশান্ত বলছেন, বাংলায় নির্বাচন লড়ার জন্য বিজেপি মূলত যে পাঁচটি রণকৌশল সাজিয়েছে তার মধ্যে একটি হল মেরুকরণ, অন্যটি হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মানুষের মধ্যে রাগ সৃষ্টি করা, তৃতীয় হল, তৃণমূল কংগ্রেস দল একেবারে সর্বহারা হয়ে গেছে এটা প্রমাণ করা। চতুর্থত, সিডিউল কাস্ট এবং তপশিলি জাতির সমর্থন আদায় করা। পঞ্চমত, দেশের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে নির্বাচনে এগিয়ে যাওয়া। এই প্রেক্ষিতে তিনি বলছেন, ভারতবর্ষে এমন কোন রাজ্য নেই যেখানে মেরুকরণের রাজনীতি ফ্যাক্টর হয়নি। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিজেপি যেভাবে এই মেরুকরণ নিয়ে রাজনীতি করেছে সেই রাজনীতির অন্য কোনো বিরোধী দল করেনি। এই কারণে, এবারের বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে তপশিলি ভোটব্যাঙ্ক একটা বড় ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করছেন প্রশান্ত কিশোর। কারণ এর আগে এইভাবে কোনো রাজনৈতিক দল তাদের নিয়ে রাজনীতি করেনি। সুতরাং বিজেপি এই ব্যাপারটা ভালোভাবে কাজে লাগাতে চাইছে বলে মন্তব্য তাঁর। যদিও প্রশান্ত কিশোর একেবারে আত্মবিশ্বাসী যে এমনটা করেও বিজেপি বাংলার ক্ষমতা দখল করতে পারবে না। কেন, সেটাও বিশ্লেষণ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন- কিছু বিভীষণ, মীরজাফর আছে! চড় মেরে সাফাই দিলেন বাবুল
ভোট কুশলীর বক্তব্য, মেরুকরণ করার পরে দেখতে হবে বিজেপি ৬০ শতাংশ ভোট নিজেদের দখলে আনতে পারছে কিনা। মেরুকরণ হওয়া সত্বেও দেখা গিয়েছিল, ২০০২ সালের পর গুজরাট এবং উত্তরপ্রদেশে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরে সেখানে ৫০-৫৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। বাংলায় তাদেরকে এই ভোট শতাংশ বাড়াতে হবে ক্ষমতায় আসতে গেলে। কারণ, ৬০ শতাংশ ভোট না পেলে কোনোভাবেই ক্ষমতায় আসতে পারবে না তারা। তবে প্রশান্ত কিশোর মনে করেন, বাংলায় মেরুকরণ হলেও তা দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতো হয়নি। আর ঠিক এই জায়গাতেই ধাক্কা খাবে বিজেপি।