নয়াদিল্লি: হরিয়ানার এক মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান তিনি৷ শুধুমাত্র নিজের মেধা ও পরিশ্রমের জোড়ে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন পূজা৷ সেখানে মোটা মাইনেয় উচ্চপদস্থ চাকরি৷ বিলাসবহুল জীবন৷ সোঁদা মাটির গন্ধ মেখে বড় হওয়া মেয়ের এই উত্থান তাজ্জব করেছিল গ্রামের মানুষদের৷ গর্বে বুক ভরে উঠেছিল বাবা-মায়ের৷ সেই মেয়েই আরও একবার সকলকে হতবাক করলেন৷ বিলেতের দামী চাকরি ছেড়ে স্বদেশে ফিরে এলেন মাটির টানে৷
আরও পড়ুন- উপনির্বাচনে অসম-মধ্যপ্রদেশ-কর্ণাটক-তেলেঙ্গানায় এগিয়ে কোন দল?
জানেন কে এই মেয়ে? তিনি আর কেউ নন আইপিএস অফিসার পূজা যাদব৷ ১৯৮৮ সালে হরিয়ানার এক গ্রামে জন্ম পূজার৷ সেখানেই বেড়ে ওঠা৷ পরে বায়োটেকনোলজি এবং ফুড টেকনোলজি নিয়ে এমটেক করে বিলেতে চাকরির ডাক পান৷ প্রথমে কানাডা এবং পরে জার্মানিতে কাজ করেন তিনি৷ কিন্তু কয়েক বছর বিদেশে কাটানোর পরেই তাঁর মনে একটা কাঁটা যেন খচখচ করতে শুরু করে৷ মোটা মাইনের সুখের চাকরিও শান্তি দিতে পারছিল না পূজাকে৷ যার জেরে সব ছেড়েছুড়ে চলে আসেন হরিয়ানায়৷
পূজার মনে হচ্ছিল, তাঁর সব মেধা-শ্রম অন্য দেশের উন্নয়নে চলে যাচ্ছে৷ নিজের দেশের জন্য কিছুই করতে পারছেন না তিনি৷ মনস্থির করেন দেশে ফিরে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসবেন৷ চ্যালেঞ্জ নিয়েই ফুৎকারে উড়িয়ে দেন দামী চাকরির প্রলোভন৷ চলে আসেন দেশে৷ শুরু হয় ইউপিএসসি’র প্রস্তুতি৷ প্রথমবারের প্রচেষ্টায় অবশ্য সাফল্য ধরা দেয়নি৷ কিন্তু দ্বিতীয় বারেই সফল তিনি৷ ২০১৮ সালে আইপিএস অফিসার হিসাবে নিয়োগপত্র হাতে পান৷
পূজা নিজের জীবনে সফল৷ কিন্তু এই সাফল্যের পথ সমৃণ ছিল না৷ জীবনের প্রতিটি ধাপে পরিবারের সমর্থন পেলেও আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিল না কোনও দিনই৷ একটা সময়ের পর নিজের পড়াশোনার দায়িত্ব নিজেই বহন করেছেন পূজা৷ টিউশন করেছেন৷ এমনকী এমটেক পড়ার খরচ জোগাতে রিসেপশনিস্টের কাজও করেছেন৷ দরিদ্র পরিবারের মেয়ের জীবনের প্রতি এই উচ্চাশা অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন করেছিল তাঁকে৷ অনেক অনেক কথাও শুনিয়েছে৷ কিন্তু হার মানেননি পূজা৷ একগ্রতার সঙ্গে নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকেছেন৷ এই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মনোভাবই তাঁকে আজ আইপিএস অফিসার করে তুলেছে৷
পূজার স্বামী বিকল্প ভরদ্বাজ একজন আইএএস অফিসার৷ ২০১৬ সালে কেরলে আইএএস হিসাবে কাজে যোগ দেন তিনি৷ এখন বদলি নিয়ে চলে এসেছেন গুজরাতে৷ প্রসঙ্গত, গুজরাতেই কর্মরত রয়েছেন পূজা৷ ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সাত পাকে বাধা পড়েন তাঁরা৷