নয়াদিল্লি: করোনা পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে আগামী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ তাঁর এই সিদ্ধান্তের পরই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা৷ প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণকে ফাঁকা আওয়াজ বলে তোপ দাগলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম৷ নমোর ভাষণকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি অভিষেক মনু সিংভির মতো প্রবীণ কংগ্রেস নেতাও৷
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পরই চিদাম্বরম বলেন, ‘‘আমরা বুঝতে পারছি, মানুষের জীবন বাঁচাতে লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা ছিল৷ এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছি৷ তবে প্রধানমন্ত্রীর নববর্ষের বার্তায় ‘নতুন’ কিছু ছিল কি?’’ এদিন সাত দফা ট্যুইট করে সরকারের এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেন চিদাম্বরম৷ বর্ষীয়াণ এই কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘‘আরবিআই-এর প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন এবং নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ উপেক্ষা করছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ দরিদ্রদের বাঁচিয়ে রাখা ও তাঁদের জীবিকার দায় সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে নেই৷’’
২১ দিনের লকডাউনের পর আরও ১৯ দিন লড়াই করতে হবে গরিব মানুষগুলোকে৷ এই পরিস্থিতিতে সরকার কেন আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করছে না, প্রশ্ন তুলেছেন তিনি৷ এই পরিস্থিতিতে কান্না ছাড়া কোনও উপায় নেই৷ এর পরেই ট্যুইট করে চিদাম্বরম লেখেন, ‘‘কাঁদো আমার প্রিয় দেশ…৷’’ ট্যুইট করে তিনি আরও বলেন, “দেশের দরিদ্রদের ২১+১৯ দিনের জন্যে নিজেদের হালেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷ অর্থ আছে, খাবার আছে, অথচ সরকার সেই টাকা বা খাবার দেশের দরিদ্রদের দিচ্ছে না৷’’
এদিকে, নমোর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন আরও এক বর্ষীয়াণ কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি৷ তিনি বলেন, “এ যেন অনেকটা ডেনমার্কের রাজপুত্র ছাড়া হ্যামলেট” কোনও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়াই আগামী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির ঘোষণা করে দিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী৷ দেশের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে তাঁর ভাষণে আর্থিক প্যাকেজের কোনও উল্লেখ নেই৷
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে সিংভি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ অসাধারণ৷ খালি উপদেশে ভরা৷ কোনও সুনির্দিষ্ট আর্থিক প্যাকেজ নেই৷ দরিদ্র, মধ্যবিত্ত, বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কারোর জন্য কোনও প্রকল্প নেই৷’’ তিনি মনে করেন, এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে সরকারের আরও বেশি ত্রাণ ঘোষণা করা উচিত ছিল। সিংভির বক্রোক্তি, প্রধানমন্ত্রী মোদি নিশ্চয়ই আশ্বস্ত হচ্ছেন এই ভেবে যে সমস্ত শেয়ার হোল্ডাররা তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন এবং কঠোরভাবে লকডাউনের অনুশাসন মেলে চলবেন।