নয়াদিল্লি: দেশজুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা৷ দ্রুত গতিতে বাড়ছে মৃত্যুও৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ২৫ মার্চ গোটা দেশেজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ কিন্তু, তারপরও সেভাবে কমানো যায়নি করোনার প্রভাব৷ দেশজুড়ে যখন করোনা আক্রান্ত ১৮৬০ জন, মৃত ৫৩, ঠিক তখন করোনার আবহে তৃতীয় দফায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে আগামী ৫ এপ্রিল বাড়ির আলো ন’মিনিট বন্ধ রেখে ভারত মাতাকে স্মরণ করার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ কিন্তু, ৯ মিনিট বাড়ির আলো নিভিয়ে রাখলে আদৌও করোনার সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব? প্রশ্ন তুলছে সাধারণ জনতা৷
আজ মোদি বলেন, ‘‘আগামী ৫ এপ্রিল ১৩০ কোটি জনতার মহাজাগরণ ঘটবে৷ ১৩০ কোটি জনতার সংকল্প নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে৷ ৫ এপ্রিল রবিবার রাত নটার সময় আমি আবার আপনার থেকে ৯ মিনিট চাইছি৷ মন দিয়ে শুনুন, আমি ৫ এপ্রিল রবিবার রাত ন’টায় আপনাদের থেকে সময় চাইছি৷ ওই দিন ঘরের আলো নিভিয়ে, মোমবাতি, প্রদীপ, টর্চ লাইট জ্বালিয়ে রাখুন৷ ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে ৯ মিনিট মোমবাতি, প্রদীপ, টর্চ লাইট জ্বালিয়ে রাখুন৷ তবে, এই জন্য বাইরে কোথাও যেতে হবে না৷ ওই সময় আলো নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখুন৷ কারণ আমরা করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছি৷ সেই উদ্দেশ্যে ভারত মাতাকে স্মরণ করুন৷ যাতে এই পরিস্থিতি থেকে লড়াই করতে আমাদের শক্তি জোগায়৷ আমরা একা নই৷ এই উদ্যোগে আপনিও শামিল হোন৷’’
আলো নিভিয়ে জনতার মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী৷ কিন্তু, করোনার জেরে থমকে যাওয়া ভারতীয় অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে কোনও ববার্তাই দিলেন না প্রধানমন্ত্রী৷ করোনা রুখতে লকডাউনের সিদ্ধান্ত আরও কড়াকড়া হবে কি না, সময়সীমা আরও বাড়বে কি না, তার কোনও স্পষ্ট ধারণাও দিতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী৷ করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রযুক্তি, পরিকাঠামো নিয়েও একটি শব্দও খরচ করেননি তিনি৷ সংক্রমণ রুখতে সরকার কী পদক্ষেপ করতে চলেছে তাও জানাননি মোদি৷ লকডাউনের জেরে কাজ হারানো পরিযায়ী শ্রমিকদের কী হবে? রেশন, অনুদান দেওয়া ছাড়া বিকল্প কর্মসংস্থানের কোনও বার্তাই নেই প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে৷ পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কেন্দ্র কী ব্যবস্থা করবে তারও কোনও স্পষ্ট বার্তা নেই৷ লকডাউনের পরে জনজীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে কোনও ঘোষণাই করেনি তিনি৷ এই পরিস্থিতিতে বাড়ির আলো ৯ মিনিটের জন্য নিভিয়ে আদৌও করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব? প্রশ্ন তুলছেন আমজনতা৷