নয়াদিল্লি: লাদাখে চিনের বিনা প্ররোচনায় হামলা প্রসঙ্গে এখনও কেন চুপ প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি? বিরোধীদের তরফে এহেন অভিযোগ ওঠার পর অবশেষে পদক্ষেপ নিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর৷ ইন্দো-চিন সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে এবার সর্বদল বৈঠকের ডাক দিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷
প্রধানমন্ত্রী দফতরের তরফে টুইট করে জানানো হয়েছে, আগামী শুক্রবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ সর্বদল বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ বৈঠকে যোগ দেবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রধানরা৷ কথা হবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে৷ চিনকে যোগ্য জবাব দিতে ভারতের কী করনীয় তা নিশ্চিত করতেই মূলত এই বৈঠক ডাকা হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে৷
ইতিমধ্যেই নর্থ ব্লকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী-সহ নিরাপত্তা বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছে আজ সকালে৷ পরিস্থিতি কোন দিকে এগোচ্ছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই পর্যালোচনা করা হয়েছে৷ চিনের আগ্রাসন নীতি রুখতে ভারত কী পদক্ষেপ নেবে? এবার তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷
অন্যদিকে, নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে রাহুল বলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে’, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) কী ঘটছে তা জানতে চায় দেশের মানুষ৷ বুধবার টুইট করে রাহুল বলেন, ‘‘ কেন চুপ করে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী? তিনি এখনও কেন লুকিয়ে রয়েছেন? অনেক হয়েছে৷ আমরা জানতে চাই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় কি ঘটেছে৷ আমাদের সেনাদের মারার সাহস কী করে পায় চিন? আমাদের ভূ-খণ্ড দখল করার সাহস ওদের কে দিয়েছে?’’ গালওয়ানের ঘটনার পরই সীমান্ত ইস্যুতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং অন্যান্য উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি৷
মঙ্গলবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে একটি বিবৃতিতে প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছিল, গালওয়ান উপত্যকায় এক কর্নেল-সহ তিন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর হয়েছে৷ কিন্তু রাতে ফের এক বিবৃতিতে ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়, গুরুতর আহত আরও ১৭ জন সেনার প্রবল ঠাণ্ডায় মৃত্যু হয়েছে৷ অন্যদিকে, ভারতীয়বাহিনীর প্রত্যাঘাতে চিনা সেনার মৃত্যু হয়েছে বলেও সেনা সূত্রে খবর৷ প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছিল সংখ্যাটা পাঁচ। কিন্তু রাতে সংবাদসংস্থা এএনআই-কে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভারতীয় সেনার হিসেবে মৃত্যু হয়েছে ৪৩ জন চিনা সেনার৷
গালওয়ান সংঘর্ষের জন্য চিনকেই দায়ী করেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রক৷ অন্যদিকে মঙ্গলবার রাতে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতির নজর রাখছে ওয়াশিংটন৷ মার্কিন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘এলএসি-তে ভারত-চিন সেনার সংঘাতের পরিস্থিতির উপর আমরা কড়া নজর রাখছি৷ ভারতীয় সেনা জানিয়েছে এই সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে৷ আমরা তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই৷ শান্তিপূর্ণভাবে এই পরিস্থিতির স্থায়ী সামাধানকে সমর্থন জানাই আমরা৷’’ গত ২ জুন ভারত-চিন সীমান্ত ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা হয়েছে বলেও জানান তিনি৷