নয়াদিল্লি: বুধবার দুপুরে তামিলনাড়ুর কুন্নুরে ভেঙে পড়ে অভিশপ্ত এমআই-১৭ বিমান৷ মৃত্যু হয় দেশের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা সহ ১৩ জনের৷ দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই কপ্টারে চালকের আসনে ছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম সেরা যুদ্ধবিমান চালক পৃথ্বী সিং চৌহান৷ যাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন উর্ধ্বতন সেনাকর্তারাও৷ সেই দক্ষ চালকও শেষ রক্ষা করতে পারেননি৷ নীলগিরির বুকে ভেঙে পড়ে এমআই-১৭৷ মৃত্যু হয় পৃথ্বীরও৷
আরও পড়ুন- ৩৭৮ দিনের লড়াই আজ শেষ, আন্দোলন প্রত্যাহার করলেন কৃষকরা
পৃথ্বী আগ্রার বাসিন্দা৷ চার বোনের একমাত্র আদরের ভাই ছিলেন তিনি৷ গোটা পরিবারের আদরের সন্তান৷ ভারতীয় বায়ুসেনায় যোগ দেন ২০০০ সালে৷ ২০১৫ সালে উইং কমান্ডার হিসাবে পদোন্নতি হয় তাঁর৷ বাড়িতে কোনও দিনও কারও সঙ্গে উঁচু গলায় কথা বলতে শোনা যায়নি পৃথ্বীকে৷ কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে সেই পৃথ্বীই ছিলেন চরম আগ্রাসী৷ ছিলেন সাহসী যোদ্ধা৷ সুদান থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণও নিয়ে এসেছিলেন তিনি৷ যা তাঁর দক্ষতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছিল৷ এহেন একজন দক্ষ পাইলট চালকের আসনে থাকা সত্বেও কী ভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটল, তা ভেবে পাচ্ছেন না পৃথ্বীর সহকর্মীরা৷
গতকাল সুলুর থেকে কুন্নুর ওয়েলিংটনে নিজের কলেজে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন সস্ত্রীক সিজিএস রাওয়াত৷ গন্তব্য থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে ছিলেন তাঁরা৷ সেই সময়ই দুর্ঘটনাটি ঘটে৷ মঙ্গলবার বাবা-মায়ের সঙ্গে শেষবার কথা বলেছিলেন পৃথ্বী৷ বুধবার দুপুরে যখন দুর্ঘটনাটি ঘটে তখন টিভিতে খবর দেখছিলেন পৃথ্বীর মা সুশীলা চৌহান৷ কিন্তু তেমন কোনও খবরই দেখতে পাননি তিনি৷ এর পর টিভি চালিয়েই ঘুমিয়ে পড়েন৷ যখন পৃথীর মৃত্যুর খবর দেখানো হয়, তখন তিনি গভীর ঘুমে৷ পরে পৃথ্বীর বাবা ফোন করে খবরটা জানান৷ মঙ্গলবার রাতে শেষবার মাকেই ফোন করেছিলেন পৃথ্বী৷
উইং কমান্ডোর পৃথ্বীর বয়স চল্লিশের কোঠায়৷ ২০০৭ সালে বিয়ে হয় তাঁর৷ ১২ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে তাঁদের৷ স্বামীর মৃত্যুতে দিশেহারা তাঁর স্ত্রী৷ ভেঙে পড়েছেন মা সুশীলাদেবী৷