ঝাড়খণ্ড: বন্ধুর অসুস্থ বাবাকে পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও অ্যাম্বুল্যান্সের অপেক্ষা না করে করিনা কাপুরের স্কুটিতে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন আমির খান৷ ‘থ্রি ইডিটয়স’ সিনেমার সেই দৃশ্যটি আজও দর্শকদের মনে উজ্জ্বল৷ তবে এবার বাস্তবেও এই একই দৃশ্যের সাক্ষী থাকল ঝাড়খণ্ডের একটি হাসপাতাল৷ ঘটনাটি পালামউ মেদিনিরাই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। এই ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, কোনও উপায় না পেয়ে স্কুটিতে চাপিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালের ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করে রাজ্যের পরিস্থিতি বোঝানোর চেষ্টা করেন কোনও এক নাগরিক। ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় সেয়ার করতেই মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালের ওয়ার্ডের মধ্যে এক অসুস্থ রোগীকে তিন যুবক মিলে ধরাধরি করে একটি স্কুটিতে চাপিয়ে দিচ্ছেন। এরপর সামনে পিছনে দু’জন বসেন এবং তাঁকে কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রোগীর মুখে মাস্ক, তবে শরীর অসুস্থ হওয়ায় স্কুটি থেকে নেতিয়ে পড়ছেন তিনি। তবে তাঁকে স্কুটিতে চড়িয়ে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যেভাবে আছড়ে পড়েছে, তাতে এই দৃশ্য আর বিরল কিছু নয়৷ প্রায় প্রতিদিনই অক্সিজেনের অভাবে দেশের নানা প্রান্ত থেকে বহু রোগীর মৃত্যুর খবর শোনা যাচ্ছে। অক্সিজেনের ঘাটতি যেভাবে মাঝরাতে ঘুম ভাঙিয়ে সাধারণ মানুষকে দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করে বেড়াচ্ছে, তেমনই প্রতিদিন ঝড়ের গতিতে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে বেডের অপ্রতুলতা বুঝিয়ে দিচ্ছে এখনই আরও সাবধান না হলে, সামনে ভয়ানক বিপদ অপেক্ষা করছে। কোনও হাসপাতালে বেড নেই, কোথাও আবার স্ট্রেচার পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না। যেমনটা ঘটেছে এ দিন ঝাড়খন্ডে। এই মুহূর্তে ঝাড়খণ্ডের যা পরিস্থিতি তাতে রোগীর জন্য বেড কেন, একটা স্ট্রেচার পাওয়াও কার্যত একপ্রকার অসম্ভব। তার ওপরে সংকট বাড়িয়েছে অক্সিজেনের ব্যাপক ঘাটতি। অসহায়ের মতো পৃথিবীর সুস্থ হওয়ার আশায় দিন গুনছে সাধারণ মানুষ।