নয়াদিল্লি: সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের আঘাত হজম করতে পারেনি পাকিস্তান৷ হতে পারে পাল্টা আক্রমণ৷ মঙ্গলবার এই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে সেনা প্রধানদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরবর্তী পরিস্থিতি সামলা দিতেই এই বৈঠক বলে জানা গিয়েছে৷
পাকিস্তান পাল্টা হামলা করতে পারে, এই আশঙ্কা থেকে ইতিমধ্যেই সেনাকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ শোনা যাচ্ছে হামলার পরই পাকিস্তানের দিক লক্ষ্য করে মিসাইল প্রস্তুত রেখেছে ভারতীয় সেনা। আম্বালা, পাঠানকোট, হালওয়ারা বিমানঘাঁটিতে মিরাজ-২০০০, মিগ ২৯ এবং সুখোই ৩০-কে তৈরি রাখা হয়েছে। এছাড়া সমস্ত বায়ুসেনাঘাঁটিকে মিসাইল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বায়ুসেনা প্রধান।
ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ১২ ঘণ্টার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দিল পাকিস্তান৷ ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের জাবাব, ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় জবাব দেবে পাকিস্তান! মঙ্গলবার জরুরি বৈঠক শেষে এমনটাই মন্তব্য করলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান৷ এই বিষয়ে বুধবার পাক সংসদে ভাষণ দেবেন ইমরান৷ যে কোনও পরিস্থিতির জন্য সেনা ও দেশবাসীকে তৈরি থাকতে বললেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান৷
নিজের ঘরে মার খাওয়ার পর এবার প্রত্যাঘাতের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে পাকিস্তান৷ বালাকোট, চাকোতি এবং মুজফ্ফরাবাদে জয়েশ জঙ্গিদের তিনটি লঞ্চপ্যাড গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ইতিমধ্যেই সংসদের নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান। এদিনের এই ঘটনার পর জরুরি বৈঠকেও বসেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এদিন নিরাপত্তা কাউন্সিলের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইমরাম৷ দীর্ঘ বৈঠক করে ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণের হুমকিও দেন তিনি৷
মঙ্গলবার ভারতের হামলা প্রসঙ্গে পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেন, ‘‘এটা ভারতের আগ্রাসন। দায়িত্বপূর্ণভাবে ও কৌশলগতভাবে এর জবাব দেবে৷’’ পাক বিদেশ মন্ত্রীর আরও মন্তব্য, ‘‘আমরা বিশ্বকে এটা বারবার বলছিলাম যে ভারত এরকম একটা কিছু করতে পারে। সেটাই এ বার তারা করে দেখাল। পাকিস্তানের উপর বিপদ ঘোরাফেরা করছে এটা দেখতে পাচ্ছি। পাকিস্তান বেঁচে আছে এবং তারা শক্তিশালী। আমরা একটা দায়িত্বশীল রাষ্ট্র। পাকিস্তান জানে কীভাবে তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে হবে৷’’
ভারতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ‘পর্দাফাঁস’ করতে মিডিয়াকে ঘটনাস্থল দেখাবে পাক সরকার৷ মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি জানান, ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ‘পর্দাফাঁস’ করতে উদ্যোগী হয়েছে পকা সরকার৷ ভারতের বিশ্বের কাছে খোটে করে দেখাতে পাক সংবাদমাধ্যমে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করানো হবে বলেও জানান তিনি৷ গোটা ঘটনায় নিন্দা করে ভারতকে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে বলেও দাবি করেন তিনি৷
মঙ্গলবার ভারতের হামলা প্রসঙ্গে পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেন, ‘‘এটা ভারতের আগ্রাসন। দায়িত্বপূর্ণভাবে ও কৌশলগতভাবে এর জবাব দেবে৷’’ পাক বিদেশ মন্ত্রীর আরও মন্তব্য, ‘‘আমরা বিশ্বকে এটা বারবার বলছিলাম যে ভারত এরকম একটা কিছু করতে পারে। সেটাই এ বার তারা করে দেখাল। পাকিস্তানের উপর বিপদ ঘোরাফেরা করছে এটা দেখতে পাচ্ছি। পাকিস্তান বেঁচে আছে এবং তারা শক্তিশালী। আমরা একটা দায়িত্বশীল রাষ্ট্র। পাকিস্তান জানে কীভাবে তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে হবে৷’’
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে এবার আদা-জল খেয়ে মাঠে নামল ভারত৷ গোটা বিশ্বের কাছে পাকিস্তানের মুখে ঝামা ঘসতে সমস্ত রকম পরিকল্পনা স্থির করে ফেলেছে ভারত৷ জানা গিয়েছে, বিভিন্ন দেশের ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের পাকিস্তানের পর্দাফাঁসের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এভাবে আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার পরিকল্পনা দিল্লির৷
ভারতীয় বিমান হামলায় বালাকোটে ধ্বংস হয়েছে জইশের অস্ত্রভাণ্ডার। দুশোরও বেশি একে ৪৭ রাইফেল, প্রচুর গ্রেনেড, বিস্ফোরক এবং ডিটোনেটর নষ্ট করা হয়েছে। খতম হয়েছে ৩০০ জঙ্গি। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ওই জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভিতর সিঁড়িতে আমেরিকা, ব্রিটেন ও ইজরায়েলের পতাকা আঁকা রয়েছে। ওই ঘাঁটির প্রধান ইউসু আজহার ওরফে মহম্মদ সালিম ১৯৯৯ সালে কান্দাহার বিমান অপহরণে জড়িত ছিল। পরে বন্দি বিনিময়ে সে ছাড়া পায়। ২০০২ সালে ভারত ইসলামাবাদকে যে ২০ পলাতক জঙ্গির নাম দিয়েছিল তাতেও ছিল ইউসুফের নাম। তার নামে ইন্টারপোলও রেড কর্নার নোটিশ জারি করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ইউসুফের বাড়ি করাচিতে। সে হিন্দি এবং উর্দুতে স্বচ্ছন্দ।
ভারতীয় বায়ু সেনার অভিযানে ছাড়খাড় মাসুদ আজহারের গোটা পরিবার৷ ভারতীয় সেনার অভিযানে এখনও মাসুদ আজহারের দুই ভাই ও এক শ্যালকের মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর৷ জানা গিয়েছে, সেনা অভিযানে খতম হয়েছে জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের শ্যালক আজহার ইউসুফ৷ মৃত্যু হয়েছে মৌলানা তাহের সইফ ও ইব্রাইম আজাহারের৷ গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি জইশ প্রধান মাসুদ৷ এই জঙ্গি নেতার চিকিৎসা চলছে গোপনে৷
জানা গিয়েছে, ১৯৯৯-এ ভারতীয় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান IC-814 হাইজ্যাকে নাম জড়ায় আজহার ইউসুফের৷ কান্দাহার বিমান হাইজ্যাকের মূলচক্রী ছিল আজহার ইউসুফ৷ বিদেশ সচিব বিজয় গোখলে সাংবাদিক বৈঠকে এই অভিযানের কথা জানান৷ এই অভিযানের মূল টার্গেট ছিল আজহার ইউসুফ৷ বালাকোট জইশের প্রধান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র৷ বায়ুসেনা সূত্রে খবর, এই অভিযানের ফলে অনেক জঙ্গি প্রশিক্ষক ও সিনিয়র কমান্ডার খতম হয়েছে৷ এই ক্যাম্পটির নেতৃত্ব দিত মৌলানা আজহার ইউসুফ৷ জানা গিয়েছে, মৌলানা তাহের সইফ ও ইব্রাইম আজাহারকে ওই জঙ্গি শিবিরের দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে রেখেছিল মাসুদ আজহার৷
বায়ুসেনা সূত্রে খবর, বালাকোট, চাকোতি এবং মুজফ্ফরাবাদে জয়েশ জঙ্গিদের তিনটি লঞ্চপ্যাড গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ১২টি মিরাজ যুদ্ধবিমান এই অভিযানে অংশ নেয়। সীমান্ত পেরিয়ে ৮০ কিমি ভিতরে ঢুকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালানো হয়। ধ্বংস করে দেওয়া হয় একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি। ঘটনায় প্রায় ২০০ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অতর্কিত এই সফল অভিযান চালিয়ে ১২টি যুদ্ধবিমানই ভারতের আদমপুর বায়ুসেনাঘাঁটিতে ফিরে আসে।
শোনা যাচ্ছে হামলার পরই পাকিস্তানের দিক লক্ষ্য করে মিসাইল প্রস্তুত রেখেছে ভারতীয় সেনা। আম্বালা, পাঠানকোট, হালওয়ারা বিমানঘাঁটিতে মিরাজ ২০০০, মিগ ২৯ এবং সুখোই ৩০-কে তৈরি রাখা হয়েছে। এছাড়া সমস্ত বায়ুসেনাঘাঁটিকে মিসাইল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বায়ুসেনা প্রধান।
জানা গিয়েছে, বালাকোট সেক্টর থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে পড়ে ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানগুলি। জয়েশ জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে লেজার গাইডেড হামলা করা হয়। এর ফলে লক্ষ্যবস্তুতে নিঁখুতভাবে হামলা চালানো সম্ভব। শোনা যাচ্ছে হামলার জেরে পাকিস্তানের দুটি যুদ্ধবিমানও ধ্বংস করা হয়েছে।