আজ বিকেল: করোনা ভাইরাস মানুষের জীবনে বড়সর পরিবর্তন এনেছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য বা সামাজিক জীবনে সেই পরিবর্তন স্পষ্ট লক্ষনীয়। বিগত দিনে কোভিড ১৯ এর প্রকোপে জনতার রুজি রোজগারে ব্যাপক ঘাটতির কথা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় আলোচিত হয়েছে। আলোচ্য নানান বিষয়ের মধ্যে একটি বিষয় ছিল অনেককেই আকর্ষিত করেছে। তা হল, কোভিড-পরবর্তী অপরাধ প্রবণতা। সংবাদ মাধ্যমে অনেকেই দাবি করেছেন, লকডাউনের পরে রাস্তায় সংগঠিত অপরাধ বা ‘স্ট্রিট ক্রাইম’ অনেকটাই কমেছে। অন্যদিকে, কিছু লেখক দাবি করেছেন। পরিস্থিতি ভয়ানক হবে। কাজ হারিয়ে মানুষ অপরাধের জগতে পা-বাড়াবে। স্ট্রিট ক্রাইম তো বাড়বেই, সঙ্গে বাড়বে গৃহ বিবাদ বা ডোমেস্টিক ভাওলেন্স।
পাশ্চাত্য বিশ্বের দুই গবেষক – ইউট্রেচ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমি নিভেট এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানুয়েল আইসনার গবেষণা চালিয়েছেন ২৩টি দেশের ২৭টি শহরে। লকডাউনের তথ্য পাওয়া খুবই দুস্কর, গবেষকরা তা স্বীকার করে নিয়েছেন। অনেক জায়গা থেকেই তারা তথ্য চেয়েও পাননি। তবে গবেষণার সময় তারা খেয়াল রেখেছেন সেই সব শহরগুলির উপরেই, যেখানে করোনা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
দুই গবেষকের এই গবেষণা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম – ‘দ্য প্রিন্ট’। লেখক – ওই দুই গবেষক। প্রতিবেদনে তারা জানাচ্ছেন – পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে লকডাউন ঘোষিত হওয়ার পর গড়ে দৈনিক সংগঠিত অপরাধের সংখ্যা কমেছে। প্রায় ৩৭ শতাংশ কম হয়েছে এই সংখ্যাটি। তবে এটাও ঠিক এক একটি শহরের সংগঠিত অপরাধের চরিত্র আলাদা। স্ট্রিট ক্রাইম, যেমন চুরি, ছিনতাই কমেছে যথাক্রমে ৪৭ এবং ৪৬ শতাংশ। খুন কমেছে ১৪ শতাংশ। তবে, খুনের পরিসংখ্যান দিতে গিয়ে গবেষকরা বলছেন – এই তথ্য সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত নয়। একটি আভাস মাত্র। গবেষকদের ধারণা, লকডাউনের ফলে বাড়িতে কলহ বেড়েছে। তা অনেক সময় অপরাধ সংগঠিত করেছে। আবার নানারূপে বেড়েছে সাইবার ক্রাইম। এই তারা চালিয়ে যাবেন।