হরিদ্বার: এবার ভারতের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘কুম্ভমেলায়’ বড়সড় বেনিয়মের তত্ত্ব সামনে এল হরিদ্বার প্রশাসনের তদন্তে। কুম্ভমেলাকে করোনার ‘সুপার স্প্রেডার’ বলা হয়েছিল আগেই৷ এবার বিজেপিশাসিত উত্তরাখণ্ডে সেই কুম্ভমেলায় এক লক্ষের বেশি কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট জাল হয়েছে বলে জানা গেল।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে পঞ্জাবের এক ব্যক্তির ফোনে কোভিড টেস্টের রিপোর্ট যায়। রিপোর্টটি হরিদ্বার থেকে পাঠানো হয়৷ যদিও ওই ব্যক্তি কুম্ভে যাননি। এমনকি কোভিড পরীক্ষাও করাননি। বিষয়টি তিনি মেডিক্যাল কাউন্সিলকে জানানোর পরই তদন্তে নামে হরিদ্বারের জেলা প্রশাসন। কুম্ভমেলায় আগতদের প্রতিদিন ৫০ হাজার ব্যক্তির কোভিড পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্য সরকার পরীক্ষার জন্য ৯টি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছিল৷ ২২টি বেসরকারি ল্যাবে তারা ওই পরীক্ষা করে। কুম্ভমেলায় কোভিড বিধি অমান্য করা ও ভুয়ো পরীক্ষার একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তদন্ত শুরু করেছিল হরিদ্বার জেলা প্রশাসন। তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পেয়েই তাজ্জব বনে গিয়েছেন তাঁরা৷ করোনা পরীক্ষার টার্গেট পূরণ করতে একাধিক দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে দায়িত্বে থাকা সংস্থা।
তদন্তে জানা গিয়েছে, একটি সংস্থা অন্তত ৫০ জনের নামে একই ফোন নম্বর নথিভুক্ত করেছে। এক ঠিকানায় অনেক মানুষকে নেগেটিভ সার্টিফিকেট ইস্যু করেছে৷ যেখানে একটি কিট দিয়ে একজনের পরীক্ষা করার কথা, সেখানে একই অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট দিয়ে কমপক্ষে ৭০০ জনের পরীক্ষা করা হয়েছে। মুম্বই, আলিগড়, কানপুর, আমেদাবাদ, রাজস্থানের ভুয়ো বাড়ির ঠিকানায় শত শত বাসিন্দার নামে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে৷ তদন্তে দেখা যাচ্ছে, এমন ভুয়া সার্টিফিকেটের সংখ্যা অন্তত এক লক্ষ।
কুম্ভমেলা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক চলছিলই। বিরোধীরা ছাড়াও, বিদেশি বহু সংস্থা এই বিশাল ধর্মীয় জমায়েতকেই ভারতে কোভিড ছড়ানোর এবং নতুন কোভিড স্ট্রেন উৎপন্ন হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে। এবার সেখানেই কোভিড পরীক্ষা নিয়ে মারাত্মক সব অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় স্বাভাবিকভাবেই অস্তত্বিতে বিজেপি সরকার৷