নয়াদিল্লি: করোনাভাইরাস দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি আবার বেহাল অবস্থার মধ্যে চলে গিয়েছে। দিনপ্রতি বাড়ছে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার। সরকারি থেকে শুরু করে বেসরকারি অফিসের কর্মীরা, সদ্যোজাত শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ, করোনাভাইরাসের কামড় থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না কেউ। এই পরিস্থিতির মধ্যেই ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ১ লক্ষ রেলকর্মী। সেই প্রেক্ষিতে পরিষেবা চালু রাখা এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রকের কাছে। এই সংক্রমণ ঘটেছে বিগত কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই।
সূত্রের খবর, রেলের প্রায় ১২ লক্ষ কর্মচারীর মধ্যে ইতিমধ্যেই করোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩,০০০-এর বেশি কর্মী। উল্লেখযোগ্য ব্যাপার, এদের মধ্যে অধিকাংশ রেলকর্মী সরাসরি যাত্রীদের সংস্পর্শে আসেন। তাই এই মুহূর্তে রেল পরিষেবা চালু রাখা কার্যত চ্যালেঞ্জ কর্তৃপক্ষের কাছে। কারণ এই অবস্থার মধ্যেও রেল চালু রাখলে দেশের সংক্রমণ আরো বহুগুণ বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা। আক্রান্ত রেল কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন ট্রেনের চালক থেকে শুরু করে গার্ড, স্টেশন মাস্টার থেকে শুরু করে ঠিকা কর্মী। রেলের তরফ থেকে ইতি মধ্যেই করোনাভাইরাস চিকিৎসার জন্য ৭২ টি রেলের হাসপাতাল চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ৫০০০-এরও বেশি বেড বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা কিছুতেই কমানো যাচ্ছে না। এদিকে আগামী দিনে রেল পরিষেবা চালু রাখা যাবে কি করে সেই নিয়েও আলাদা ভাবে চিন্তা করতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
গত বছরের মতো এ বছরও লকডাউন কার্যকরী হতে পারে বলে ইতিমধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। সেই প্রেক্ষিতে পরিযায়ী শ্রমিকরা ইতিমধ্যেই নিজের নিজের রাজ্যে ফেরার চেষ্টা করতে শুরু করে দিয়েছেন। কারণ গত বছরের দুঃস্বপ্নের মতো স্মৃতি তাদের এ বছরেও তাড়া করছে। সেই প্রেক্ষিতে রেলের উপর এখন অনেক বেশি চাপ পড়েছে। অন্যদিকে এমারজেন্সি পরিষেবা চালু রাখার জন্য রেল কর্তৃপক্ষ সজাগ রয়েছে ঠিকই কিন্তু এত পরিমাণ কর্মী ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠেছে তাদের। বিগত কয়েকদিনে সংক্রমণ যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে দেশের তাকে হলফ করে বলা যায় আগামী কয়েকদিনেও সংক্রমণ বৃদ্ধির হার একই রকম থাকবে বা এর থেকে বাড়বে। তাই আপাতত কপালে চিন্তার ভাঁজ নিয়েই পরিষেবা চালু রাখার সম্পূর্ণ চেষ্টা করছে রেল কর্তৃপক্ষ।