নয়াদিল্লি: দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি তখন প্রচন্ড খারাপ। দ্বিতীয় ঢেউয়ে কার্যত নাজেহাল দেশবাসী। এর মধ্যে অক্সিজেন এবং ভ্যাকসিনের অভাব, মৃত্যুর হার বাড়ছে দিন দিন। সেই সময়ে কুম্ভমেলা আয়োজন নিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল প্রশাসন। আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে শুরু করে একাধিক বিশেষজ্ঞরা এই কুম্ভমেলাকে ‘সুপার স্প্রেডার’ বলে চিহ্নিত করেছিলেন। আর এখন সেই কুম্ভমেলা নিয়ে যে তথ্য সামনে আসছে তাতে চক্ষুচড়কগাছ সকলের।
শুরু থেকেই ধারণা ছিল যে কুম্ভমেলা দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আরও সঙ্গীন করে দেবে। যদিও প্রশাসনিক তরফে জানানো হয়েছিল যে যথেষ্ট নিয়মকানুন মেনেই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। কিন্তু এখন জানা গিয়েছে, সমগ্র কুম্ভমেলায় অজস্র বেনিয়ম হয়েছে। সবথেকে বড় খবর, প্রায় এক লক্ষ ভুয়ো করোনাভাইরাস রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে সেখানে! এর পাশাপাশি একটি মাত্র কিট থেকে প্রায় ৭০০-৮০০ জনের করোনাভাইরাস পরীক্ষা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এমনকি যারা ভাইরাস পরীক্ষা করেছেন তারা কেউই স্বাস্থ্য কর্মী ছিলেন না বলেও জানা যাচ্ছে! কুম্ভ মেলায় করোনাভাইরাস প্রটোকল সংক্রান্ত একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল বলে তদন্ত শুরু করেছিল হরিদ্বার জেলা প্রশাসন। তাদের প্রাথমিক রিপোর্টেই ধরা পড়েছে এত কিছু। গতবছর করোনাভাইরাস প্রথম ঢেউয়ের সময় দিল্লির নিজামুদ্দিন নিয়ে ব্যাপক শোরগোল হয়। দাবি করা হয় সেখানে জমায়াতের জন্য দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। যদিও সেই জমায়েত হয়েছিল লকডাউন কার্যকরী হওয়ার অনেক আগে। তবে কুম্ভমেলা নিয়ে সংশয় প্রথম থেকেই ছিল। কারণ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি মেলা আয়োজন করার মতো একেবারেই ছিল না তখন। তার পরেও এই মেলার আয়োজন হয়। পরবর্তী ক্ষেত্রে মেলা থেকে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়তে থাকে, অনেকের মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছিল।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬০ হাজার ৪৭১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। যা গত ৭৫ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯৫ লক্ষ ৭০ হাজার ৮৮১ জন। আপাতত মৃতের সংখ্যা ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৩১ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৭২৬ জনের। অ্যাকটিভ কেস ৯ লক্ষ ১৩ হাজার ৩৭৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৫২৫ জন।