নয়াদিল্লি: রাত পোহালেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শ্রীলঙ্কায়। গত সপ্তাহে প্রাক্তন লঙ্কান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের দেশ ছেড়ে পালানো এবং সর্বোপরি নিজের ইস্তফাপত্র জমা দেওয়ার পরেই এই দ্বীপ রাষ্ট্রের পার্লামেন্টের স্পিকার আগামী ২০ জুলাই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছেন। এমতাবস্থায় শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগের দিনই দেশ নিয়ে আলোচনা করতে সর্বদল বৈঠক ডাকল কেন্দ্র। জানা যাচ্ছে, আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের নেতৃত্বে এই সর্বদল বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই বৈঠকে মূলত গুরুত্ব দেওয়া হবে তামিলনাড়ু, কেরলের মতো একাধিক দক্ষিণের রাজ্যগুলিকে। কারণ শ্রীলঙ্কায় অচলাবস্থা শুরু হওয়ার পর থেকেই এই সমস্ত রাজ্যগুলিতে রিফিউজির সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বৈঠকে তাই তামিলনাড়ুর সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষ অনুরোধ করা হয়েছে বলে খবর।
জানা যাচ্ছে এই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সমস্ত রাজনৈতিক নেতা এবং সংসদের দুই কক্ষের সদস্যদের শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করবেন। এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্যই হল শ্রীলঙ্কার অস্থিরতার কারণে তামিলনাড়ুতে রিফিউজের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই রাজ্যে জনসংখ্যা যেভাবে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্তরে আলোচনা করা। মূলত সেই কারণেই এই বৈঠকে তামিলনাড়ুর সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে বাদল অধিবেশন শুরুর আগে গত রবিবার বিরোধী দলগুলির বৈঠকেই দক্ষিণী দল ডিএমকে এবং এআইএডিএমকে দাবি জানিয়েছিল প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের অবিলম্বে শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়ানো উচিত। কারণ এই দেশ গত সাত দশকের সব থেকে ভয়ংকর অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হয়েছে।
সুত্রের খবর, এই বৈঠকে বিদেশ সচিব বিনয় মোহন কোত্রা বৈঠকে উপস্থিত সমস্ত সদস্যদের এই দ্বীপ রাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে একটি প্রেসেন্টেশন দেখাবেন। বর্তমান শ্রীলঙ্কায় কিভাবে পুনরায় গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনঃ স্থাপিত করা যায় তা নিয়েও এই বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরেই সমগ্র দ্বীপ রাষ্ট্র জুড়ে যে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠেছিল তখনই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ভারত যেকোনো পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার মানুষের পাশে রয়েছে কারণ তারা এই মুহূর্তে দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, এবং সাংবিধানিক পরিকাঠামো পুনঃস্থাপন করার লড়াই শুরু করেছে এবং তাতে ভারতের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।