নয়াদিল্লি: করোনার প্রথম সারির সৈনিকদের নানাভাবে সম্মান জানানো হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাঁদের এই নিত্যদিনের মানসিক ও শারীরিক কষ্টের খবর কেই বা রাখেন৷ দিনরাত পিপিই কিট পরে করোনা রোগীদের সেবা করতে করতে তাঁরা কতটা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন, আদৌও তাঁরা বিশ্রামের সময় পান কিনা, তা নিয়ে কেই বা মাথা ঘামান৷
সম্প্রতি একজন সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছেন কোডিভ ১৯ অতিমারিতে কীভাবে চিকিৎসক, নার্সরা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন, সেই কথা৷ বন্দনা মহাজন নামে এক পলিয়েটিভ কেয়ার কাউন্সিলর চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দুর্দশার ছবি তুলে ধরেছেন টুইটারে। কোভিড আক্রান্ত হয়ে তিনি বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন তিনি অনেকটা সময় নার্স, চিকিৎসক এবং হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর সম্প্রতি টুইটারে একটি ছবি শেয়ার করেছেন তিনি, যেখানে দেখা যাচ্ছে পিপিই পরা এক স্বাস্থ্যকর্মী বিশ্রাম নিচ্ছেন।
সেই পোস্টে বন্দনা জানিয়েছেন, একজন নার্সের সঙ্গে তিনি কথা বলেছিলেন। ওই নার্স দেশে করোনা নামক অতিমারি শুরু হওয়ার পর থেকে অবিরাম কাজ করে চলেছেন। প্রথমদিকে নার্সটি একটি হস্টেলে থাকতেন আর তাঁর দুই ছেলে এক আত্মীয়র সঙ্গে থাকত। এই সেবিকার স্বামী থাকেন গালফে। ফলে এখন দুই ছেলের দেখাশোনা করার জন্য তাঁকে দেশে ফিরতে হবে। যেহেতু তিনি দীর্ঘ সময় ধরে কোভিড রোগীদের নিয়ে কাজ করছেন, তাই তিনি প্রাণপণ চেষ্টা কর চলেছেন, যাতে তাঁর কোনও সংক্রমণ না হয়, কারণ না হলে তাঁর পরিবারের ক্ষতি হবে। অন্য এক নার্স বন্দনাকে জানিয়েছিলেন, একদিন রাতে এক কোভিড রোগীর তিনি সিপিআর করেছিলেন, পরের দিন সে মারা যায়। এইরকম ঘটনা তাঁদের মনের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করে।
বন্দনা বলেছেন যে চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, আয়া থেকে শুরু করে সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে এই ভাইরাস একটা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন নার্স জানিয়েছেন, তাঁদের শরীরের সাধারণ বিষয়গুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কারণ কারওই খাওয়া বা শোয়ার সময় নেই ঠিক এখন। তাঁদের পেটের সমস্যা দেখা দিয়েছে, মুখের ভিতর ঘা হতে হতে শুরু করেছে। কারও ঋতুস্রাব হলে প্যাড পাল্টানো পর্যন্ত অনেক সময় অসম্ভব হয়ে পড়ছে।