শাম্মী হুদা: শীতকালে পথ চলার সময় এক ঠোঙা তেলেভাজা পেলে মন্দ হয়না। গরম গরম আলুর চপ, বেগুনি কিংবা পকোরা পেলে জিভে জল চলে আসে। যদি তাও না হয় তো এক ঠোঙা মুড়ি মাখা, তাতেও খুশি বাঙালি। কাজ করতে করতে মুখ চালানোর এই খাবার কত চাকুরীজীবীকে যে স্বস্তি দিয়েছে তার ইয়াত্তা নেই। তবে এবার এই স্বস্তিতে দাঁড়ি পড়তে চলেছে, সৌজন্যে ভারতীয় খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা এফ এস এস এ আই। দেশবাসীর স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত করতে নয়া নির্দেশিকা এনেছে তারা। এই নির্দেশিকায় স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, পুরনো খবরের কাগজ ও রিসাইকেল্ড প্লাস্টিক দিয়ে খাবারের প্যাকেট তৈরি করা যাবে না। এগুলি গ্রাহকের স্বাস্থের পক্ষে খুব খারাপ। এখান থেকেই অনেক রকম কঠিন রোগের সূত্রপাত হয়।
তাই খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থার নির্দেশিকা হল কোনোভাবেই পুরনো কাগজ এমনকী ব্যবহৃত প্লাস্টিক কোনরকম খাবারকে প্যাকেটজাত করতে কাজে লাগানো যাবে না। যদি কেউ এই নির্দেশিকা না মানে তাহলে সেই সব সংস্থার জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে সরকার, এই নির্দেশিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। উপমহাদেশের বেশিরভাগ মানুষ আর্থিকভাবে তেমন সচ্ছল নন, তাঁরা সাধারণত ফুটপাতের দোকান থেকে খাবার খেয়ে থাকেন যেমন তেলে ভাজা মসলা মুড়ি ঘুগনি চাট মসলা ভেলপুরি এগুলি সবই খবরের কাগজে দেওয়া হয়ে থাকে। অনেকে সিঙ্গারা বা সমসা খেয়ে থাকেন, যদিও বা কাগজের প্লেটে সিঙ্গারা দেওয়া হয় তবে চাটনি দেওয়া হয় প্লাস্টিকের প্যাকেটে। এইসব দোকানিরা নিতান্তই গরীব মানুষ তাদের সীমিত সীমিত আয়। তাই শুধুমাত্র খাবার বিক্রির জন্য কোনরকম প্যাকেট তারা তৈরি করতে পারেন না সস্তার খবরের কাগজ ও প্লাস্টিক এই কাজ চালাতে হয়। এভাবেই চলে আসছে এভাবেই সকাল বিকেল রাস্তার দোকানে ব্রেকফাস্ট সারছেন অসংখ্য ভারতীয়। একই সঙ্গে খাবারের গায়ে লেগে থাকছে ছাপাখানার কালি বিষাক্ত রাসায়নিক সেসব হজম করেই তাদের দিন যাপন চলছে। রোগও বাসা বাঁধছে ধীরে ধীরে, কখন যে বিপদ দরজায় পৌঁছে যাচ্ছে কেউ টেরই পাচ্ছেন না। খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা এই বিষয়টির উপর নজর দিয়ে হয়তো ভালো করেছে একইসঙ্গে বিপদে ফেলে দিয়েছে এক শ্রেণীর খাবার বিক্রেতাকে।
তবুও এই খাবার বিক্রেতা যারা ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশের বিভিন্ন রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসেন তাদের জন্য কিছু পরামর্শ রয়েছে সংস্থার তরফে, তা হল সুপুরি গাছের খোল থেকে প্লেট তৈরি করুন একই সঙ্গে শালপাতার বাটি থালা বানানো হোক। বাঁশ গাছের ছাল থেকে চামচ তৈরি হোক তার মধ্যেই খাবার পরিবেশন করুন এসব বিক্রেতারা। তাহলে ক্রেতার স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকবে পরিবেশ সুস্থ থাকবে রোগ-ব্যাধিও দূরে যাবে। চলতি বছরের মার্চ মাসের মধ্যেই এই নির্দেশিকা চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা, বিষয়টি আদেও কার্যকরী হয় কিনা তা ভবিষ্যৎ বলবে।