নয়াদিল্লি: প্রতিবেশী এক মহিলার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি কিষান মোর্চার এক নেতা। সেই অপরাধেই সোমবার সকালে অভিযুক্ত ওই নেতা শ্রীকান্ত ত্যাগীর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হল বুলডোজার দিয়ে। প্রসঙ্গত উত্তরপ্রদেশের দোষীকে শাস্তি দিতে বুলডোজারের ব্যবহার নতুন কোন ঘটনা নয়। এর আগেও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে রাজ্যের বহু দাগি অপরাধীর বাড়ি এভাবে রাতারাতি বুলডোজার দিয়ে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সেই সমস্ত ঘটনার সঙ্গে সোমবারের ঘটনার পার্থক্য রয়েছে। কারণ সোমবার যে নেতার বাড়িতে বেআইনি নির্মাণের নামে বুলডোজার চালানো হল তিনি নিজেই একজন বিজেপি নেতা। ফলে ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকা জুড়ে ছড়িয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য।
এলাকাবাসীদের দাবি, ওই বিজেপি কর্মী প্রতিবেশী এক মহিলাকে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তপ্ত করছিলেন। তাঁর চরিত্র নিয়ে নানান রকম খুব মন্তব্য করার পাশাপাশি তাঁকে শারীরিক নিগ্রহও করেন তিনি। এরপরেই ওই মহিলা সোজা গিয়ে নিকটবর্তী থানায় নারী হেনস্থার অভিযোগ করে ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। পরে নয়ডার পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে গ্যাংস্টার আইনেও অভিযোগ দায়ের করে বলে খবর। এরপরেই সোমবার সকালে অভিযুক্ত ঐ ব্যক্তিকে তাঁর অপরাধের ‘শাস্তি’ দিতে একেবারে ‘বুলডোজার অ্যাকশন’ নিতে দেখা যায় স্থানীয় প্রশাসনকে।
তবে জানা যাচ্ছে যৌন হেনস্তার পাশাপাশি ওই বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। দিন কয়েক আগেই তাঁর বিরুদ্ধে আবাসনের ভিতরে বেআইনি দখল এবং নির্মাণের অভিযোগ এনেছিলেন এলাকাবাসীরা। সেই সমস্ত অভিযোগের শাস্তি স্বরূপই এদিনের এই ‘বুলডোজার অ্যাকশন’।
প্রসঙ্গত, যোগী আদিত্যনাথের এই ‘বুলডোজার অ্যাকশন’ নিয়ে বহুদিন ধরেই মাথাচাড়া দিয়েছে একের পর এক বিতর্ক। এর আগেও বিরোধীরা এইভাবে অপরাধীদের বাড়িতে বুলডোজার চালানোর ঘটনাকে সামনে এনে একের পর এক জোরালো প্রশ্ন তুলেছিলেন গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে। সোমবারের ঘটনাও ব্যতিক্রম নয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, নারী হেনস্তার সাজা দিতে যদি ওই বিজেপি কর্মীর বাড়িতে বুলডোজার চালানো হয় তাহলে হাসরথ, উন্নাও কিংবা গোরক্ষপুরে যে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে বিজেপি নেতাকর্মীর নাম জড়াল তাঁদের বিরুদ্ধে কেন কোন কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হল না?