চেন্নাইঃ বিয়ে হয়েছে মাত্র এক মাস আগে। স্বামী শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে বিয়ের আগে কয়েকবার সাক্ষাৎ হলেও বাকি ভারতীয় মহিলাদের মত বিয়ের আগে শ্বশুর বাড়িতে আসার সুযোগ তেমনভাবে হয়নি। ফলে আগামীর সংসার তথা ঘরবাড়ি কেমন হতে চলেছে সে ব্যাপারে কোনো ধারনাই ছিল না নববধূর। এমতাবস্থায় বিয়ে হয়ে শ্বশুরবাড়িতে এসেই কার্যত মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। কারণ শ্বশুরবাড়িতে সমস্ত কিছু সুযোগ-সুবিধা থাকলেও নেই কোনও শৌচাগার। শৌচকর্মের জন্য পরিবারের বাকি সদস্যদের মতো তাঁকেও এবার থেকে নাকি যেতে হবে বনে-জঙ্গলে কিংবা মাঠের ধারে। একথা শুনে কার্যত আগামী সুন্দর ভবিষ্যতের সমস্ত সুন্দর স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় বছ্র ২৭-ের ওই নববধূ রম্মার। এত দূর পর্যন্ত ঠিকই ছিল। শুনে সাম্প্রতিক একটি হিন্দি সিনেমার সঙ্গে মিলও পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি জানা যাচ্ছে চেন্নাইয়ের ওই নববধূ শ্বশুরবাড়িতে শৌচাগার না পেয়ে অপমান আত্মহত্যার মত চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই মৃতার পরিবার অভিযুক্ত স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি তামিলনাড়ুর কড্ডালোরে। ওই গ্রামের বাসিন্দা ২৭ বছর বয়সী ওই তরুণীর বিয়ে হয় গত ৬ এপ্রিল। বিয়ের পরের দিন শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে রম্মা জানতে পারেন যে, শ্বশুরবাড়িতে কোনও শৌচাগার নেই। ফলে বিয়ের পরদিন থেকেই শুরু হয় চরম গন্ডগোল। স্বামীর পাশাপাশি শ্বশুরবাড়ির সদস্যদেরও ওই তরুণী জানান যেহেতু তার বাড়িতে শৌচাগার ছিল তাই জন্য শৌচাগার ব্যতীত শৌচকর্ম করা সম্ভব নয়। সঙ্গে শৌচাগারের দাবিও তোলেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লক কর্ণপাত করেনি তাঁর কোনও কথাতেই। ফলে বিয়ের পরপরই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে আসেন ওই তরুণী। স্বামীকে আলাদা থাকার কথা জানালে স্বামীও রাজি হয়নি বলে খবর। সম্প্রতি এই শৌচাগারকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক এতটাই তীক্ত হয়ে ওঠে যে শেষমেষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হন ওই তরুণী। গত সোমবার বাপের বাড়িতেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রম্মা। যদিও তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে তার বাপের বাড়ির লোকজন উদ্ধার করে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে জহরলাল নেহেরু ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন এন্ড রিসার্চ সেন্টারে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই কিছুক্ষণ পর মৃত্যু হয় রম্মার।
ইতিমধ্যেই ওই নববধূর মা স্থানীয় থানায় জামাই এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশের তরফ থেকেও তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত ওই তরুণীর শ্বশুরবাড়ির তরফ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। গোটা ঘটনায় কার্যত হতবাক এলাকার মানুষ।