করোনার আঁতুর ঘর নিজামুদ্দিনের দরগা? লকডাউন ভেঙে কেন ধর্মীয় সমাবেশ? শুরু তদন্ত

করোনার আঁতুর ঘর নিজামুদ্দিনের দরগা? লকডাউন ভেঙে কেন ধর্মীয় সমাবেশ? শুরু তদন্ত

নয়াদিল্লি: করোনা নিয়ে এবার নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে দিল্লির নিজামুদ্দিন৷

করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে জারি লকডাউন৷ দিল্লিতে চলছে কারফিউ৷ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের করা নির্দেশ, করোনা পরিস্থিতিতে কোনও ভাবেই ধর্মীয় সমাবেশ করা যাবে না৷ অথচ প্রোটোকল ভেঙেই কিছুদিন আগে দক্ষিণ দিল্লির ওই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার এক মসজিদে জমায়েতের ডাক দেয় তবলিঘি জামাত। নিজামুদ্দিন এলাকাতেই রয়েছে তবলিঘি জামাতের হেডকোয়াটার্স৷ এই জমায়েতে সামিল হন দেশ-বিদেশের প্রায় ১,৬০০ মানুষ৷ যার মধ্যে রয়েছেন ২৫০ জন বিদেশি৷ লকডাউনের জেরে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা বন্ধ হওয়ায় তাঁরা কেউই দেশে ফিরতে পারেননি৷ আটকে পড়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বহু মানুষও৷ একটি কমপ্লেক্সের মধ্যেই ঠাসাঠাসি করে রয়েছেন তাঁরা৷  

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নিজামুদ্দিন এলাকার প্রায় ২০০ সন্দেহভাজনের করোনা-পরীক্ষা করা হয় দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে। তাঁদের মধ্যে ছ’জন সংক্রমিত বলে জানিয়েছে দিল্লির স্বাস্থ্য দফতর। এই ঘটনায় রাজধানীর নতুন করে মাথাচারা দিচ্ছে আতঙ্ক৷ সংক্রমণ রুখতে প্রশাসনের কড়া নজরে গৃহবন্দি রাখা হয়েছে নিজামুদ্দিন এলাকার একটি বড় সংখ্যার মানুষ৷ শুধু নিজামুদ্দিনের কারণেই দেশের করোনা-লড়াই অনেকটা কঠিন হয়ে গেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তেলঙ্গানা সরকারের দাবি, ওই জমায়েতেই যোগ দেওয়া ছ’জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। যদিও তেলেঙ্গানার সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে মৃতের সংখ্যা এক৷

এদিকে, করোনা আক্রান্তের বিষয়ে তবলিঘি জামায়েতের মুখপাত্র ড. মহম্মদ সোহিব আলির দাবি, হাসপাতালের পক্ষ থেকে এই ধরনের কোনও রিপোর্ট তাঁরা পাননি৷ আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কোনও বিবৃতি জারি করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷

পুলিশ জানিয়েছে, গোটা ভারতে লকডাউন শুরু হওয়ার আগে গত সোমবার জমায়েতে সামিল প্রায় ১২০০ জন দক্ষিণ ভারতীয়কে দিল্লি বিমানবন্দরে ছেড়ে আসা হয়েছিল৷ কিন্তু তাঁরা বাড়ি না গিয়ে ফের নিজামুদ্দিনে ফিরে আসে।  দিল্লির এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার জানান, বর্তমানে ওই দলটি-সহ প্রায় ২০০০ জন গাদাগাদি করে ছ’তলার একটি ডর্মিটরিতে রয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জনের শরীরেও সংক্রমণ থাকলে, ভুগতে হবে হাজার হাজার মানুষকে৷

করোনা পরিস্থিতিতে নিজামুদ্দিনের মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কী ভাবে এই জামায়েত হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ একজন আক্রান্ত হলেই সংক্রমিত হবে গোটা এলাকা৷ এই ঘটনার পরই গোটা এলাকাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ। মঙ্গলবার ওই এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি দল। শুরু হয়েছে তদন্ত৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *