পাটনা: বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব ২০১৭ সাল থেকে যে কারাবাস ভোগ করছেন তার বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে হাসপাতালে। দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঝাড়খণ্ডের এক হাসপাতালে তিনি ভর্তি ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর শারীরিক অবস্থার খানিক অবনতি হলে তাঁকে দিল্লি এইমসে (AIIMS) স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিরোধী দলনেতার শারীরিক অবস্থা নিয়ে এদিন মুখ খুললেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।
এদিন লালু প্রসাদ যাদবের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন নীতীশ কুমার। কিন্তু এই আপাত সৌজন্যের মাঝেও মিশে ছিল রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কাঁটা। সাংবাদিকদের মাধ্যমে সুস্থতার বার্তা দিলেও নিজে ফোন করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কুশল জিজ্ঞাসা করবেন না জনতা দল প্রধান নীতীশ কুমার, এদিন তেমনটাই জানিয়েছেন তিনি। বলা বাহুল্য, এখনও পর্যন্ত সরাসরি তিনি লালু প্রসাদ যাদবের কোনো খোঁজ নেন নি বলেই জানা গেছে বিহার সূত্রের খবরে।
রাষ্ট্রীয় জনতা দল অর্থাৎ বিরোধী শিবিরের নেতা বলেই কি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অসুস্থতার খবর পেয়েও খোঁজ নিলেন না নীতীশ কুমার? এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তাঁর সাফ জবাব, “২০১৮ সালে যখন আমি ওঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছিলাম, তখন ওঁর কেয়ারটেকার কী বলেছিল মনে নেই? তখন থেকেই আমি ঠিক করেছিলাম ওঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ আর কখনো নেব না।” সংবাদপত্র থেকেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর খোঁজ খবর পান বলে জানিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার।
বস্তুত, লালুপুত্র তথা রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (RJD) প্রধান তেজস্বী যাদবকেই এক্ষেত্রে “কেয়ারটেকার” বলে উল্লেখ করেছেন নীতিশ বাবু। দু’বছর আগের এক ঘটনার প্রসঙ্গ টেনেই বিরোধী নেতাকে এরূপ কটাক্ষ করেছেন তিনি। ২০১৮ সালে লালু প্রসাদ যাদব হাসপাতালে ভর্তি হলে কিছুকাল পর তাঁর খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন নীতিশ কুমার। কিন্তু বিরোধী নেতার প্রতি এই উদ্বেগকে কটাক্ষ করে সেদিন তেজস্বী যাদব সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্রুপ করেছিলেন। ট্যুইটারে তিনি লিখেছিলেন, “আশ্চর্যজনক ভাবে নীতিশজি ওঁর অসুস্থতার কথা জানতে পেরেছেন হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার চার মাস বাদে!” তেজস্বী যাদবের সেই ট্যুইট বিদ্রুপের প্রতিক্রিয়ায় আর কখনো লালু প্রসাদ যাদবের স্বাস্থ্যের খোঁজ না নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন নীতিশ কুমার। দু’বছর আগের সেই ‘গোঁসা’র রেশ রয়ে গেছে এখনও।