কলকাতা: লকডাউনের দীর্ঘ আড়াই মাস পর কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা মেনে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে আনলক-ওয়ান পর্ব৷ কনটেন্টমেন্ট জোন বাদে সমস্ত জায়গায় অফিস, দোকান, বাজার, ধর্মস্থানগুলির পাশাপাশি খুলছে গিয়েছে শপিং মল, হোটেল-রেস্তোঁরা৷ তবে সব ক্ষেত্রেই রয়েছে সুরক্ষাবিধি মেনে চলার কড়া নির্দেশিকা৷
শপিং মলের ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক নির্দেশিকাগুলি একনজরে-
মলে প্রবেশের সময় অনুসরণ করার জন্য এখানে প্রধান নিয়মগুলি রয়েছে:
১) মলগুলোতে প্রবেশাধিকারের জন্য বাধ্যতামূলক হাত স্যানিটাইজ (স্যানিটাইজার ডিস্পেন্সার) এবং থার্মাল স্ক্রিনিং।
২) কেবলমাত্র সুস্থ গ্রাহক / আগতদের মলে ঢোকার অনুমতি মিলবে।
৩) সমস্ত কর্মী / গ্রাহক / দর্শকদের কেবল ফেস কভার / মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক। শপিং মলের ভিতরে ফেস কভার / মাস্ক সবসময় পরে থাকতে হবে।
৪) সমস্ত শপিং মল চত্বরে করোনা সম্পর্কিত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সংক্রান্ত পোস্টার / স্ট্যান্ডি / এভি মিডিয়া বিশেষভাবে প্রদর্শিত হবে।
৫) শপিং মল গুলি খুললেও মলের ভিতরে বাচ্চাদের খেলার জায়গা এবং ভেতরে কোনো ছোট মল, সিনেমা হল থাকলে সেগুলি খোলার অনুমতি নেই।
৬) সামাজিক দূরত্বের নিয়মাবলী নিশ্চিত করার জন্য মলের তরফে পর্যাপ্ত জনবল মোতায়েন করা হবে।
৭) যে সকল কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ঝুঁকি আছে অর্থাৎ বয়স্ক কর্মচারী, গর্ভবতী কর্মচারী এবং যে সকল কর্মচারীকে চিকিৎসকের পরামর্শ মত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হয় তাদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। জনসাধারণের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষাকারী সামনের সারিতে থাকা কর্মীদের ক্ষেত্রে এই নিয়মবিধি বিশেষভাবে প্রজোয্য। এক্ষেত্রে তাদের গ্রাহকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে হয় এমন জায়গা থেকে সরিয়ে অন্য কাজের দায়িত্ব দিতে হবে। সম্ভব হলে শপিং মলের ক্ষেত্রেও বাড়ি থেকে কাজ কর্ম পরিচালনা করা যায় এমন দিকগুলি চিন্তা ভাবনা করতে হবে। ।
৮) পার্কিং এবং চত্বরের বাইরে যথাযথ ভিড় পরিচালনা – যথাযথভাবে সামাজিক দূরত্বের নিয়ম অনুসরণ করা নিশ্চিত করা হবে।
৯) ভালেট পার্কিং বা পার্কিং এর জন্য পৃথক কর্মী থাকলে তাদের তাদের ক্ষেত্রেও ফেস কভার / মাস্ক এবং গ্লাভসের যথাযথ ব্যবস্থা রাখতে হবে। স্টিয়ারিং, ডোর হ্যান্ডলগুলি, গাড়ির চাবি ইত্যাদি সমস্ত কিছু স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
১০) মল চত্বরে বাইরে এবং ভিতরে সমস্ত দোকান, স্টল, ক্যাফেটেরিয়ার ইত্যাদির ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্বের নিয়মগুলি বাধ্যতামূলকভাবে অনুসরণ করতে হবে।
১১) সারিটি পরিচালনা করতে এবং প্রাঙ্গনে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত দূরত্ব সহ নির্দিষ্ট চিহ্নগুলি তৈরি করা যেতে পারে।
১২) অগ্রাধিকার হিসেবে গ্রাহক, কর্মী এবং বিপনন / সরবরাহের জন্য মলে পৃথক প্রবেশ এবং প্রস্থানের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
১৩) হোম ডেলিভারির সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের হোম ডেলিভারিতে পাঠানোর আগে শপিংমল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক থার্মাল স্ক্রিনিং করাতে হবে।
১৪) শপিংমলে সরবরাহ, ইনভেন্টরি এবং পণ্যাদি পরিচালনা করার সময় প্রয়োজনীয় সতর্কতা নিশ্চিত করা হবে। যথাযথ সারি পরিচালনা ও নির্বীজন ব্যবস্থা করা হবে।
১৫) শপিং মলের ভিতরে প্রবেশের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হলে যতদূর সম্ভব কমপক্ষে ৬ ফুট দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
১৬) সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে মলের ভিতরে ন্যূনতম লোকের প্রবেশের অনুমতি থাকবে।
১৭) শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে মলে লিফট ব্যবহার করা যাবে না।
১৮) মলের চলমান সিঁড়ির ক্ষেত্রেও একসঙ্গে চড়া যাবেনা। একের পর এক ভিত্তিতে ওঠানামা করতে হবে।
১৯) মলের ভিতরে বসার জায়গা থাকলে সেখানেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
২০) শীতাতপনিয়ন্ত্রণ / বায়ুচলাচলের জন্য, সিপিডাব্লুডির নির্দেশিকাগুলি অনুসরণ করা হবে যা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের তাপমাত্রা নির্ধারণ ২৪-৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে রাখতে হবে, আপেক্ষিক আর্দ্রতা থাকবে ৪০-৭০ শতাংশর মধ্যে। মলের ভিতরে তাজা হাওয়া যতটা সম্ভব বেশি থাকবে এবং বায়ুচলাচলের ব্যবস্থাও যথেষ্ট পরিমাণে করতে হবে।
২১) মলের ভিতরে কোনো বড় সমাবেশ / জামায়েত নিষিদ্ধ ।
২২) মল চত্বরে কার্যকর এবং ঘন ঘন স্যানিটেশন করতে হবে। এক্ষেত্রে মলের শৌচাগার, খাবার জল ও হাত ধোয়ার জায়গাগুলিতে বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে।
২৩) মলের অন্যান্য জায়গার পাশাপাশি লিফট, এসকেলেটর ইত্যাদি এবং দোকানগুলির ভিতরেও বার বার মানুষের হাতের সংস্পর্শে আসা অংশগুলি (দরজার হাতল, লিফটের বোতাম, হ্যান্ড রেল, বেঞ্চ, ওয়াশরুম ফিক্সার ইত্যাদি) নিয়মিত পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করা (১% সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট ব্যবহার করে) বাধ্যতামূলক।
২৪) মলে আগতরাদের ফেলে যাওয়া ফেস কভার / মাস্ক / গ্লাভসগুলি যথাযথস্থানে ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নিয়মিতভাবে কিছুক্ষণ পর পর মলের সমস্ত ওয়াশরুমগুলি খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করা হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর রাখতে হবে।
২৫) মলের ফুড কোর্টগুলির ক্ষেত্রেও থাকছে কড়াকড়ি নিয়মবিধি।
*ফুড করতে নির্ধারিত সংখ্যার অর্ধেক লোক বসতে পারবে। সেখানেও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা করতে হবে।
* খাবার অর্ডারের ক্ষেত্রে কন্ট্যাক্টলেস ওর্ডারিং এবং ও বিল দেওয়ার ক্ষেত্রে ফিজিকাল পেমেন্টের ব্যবস্থা করতে হবে।
* প্রত্যেকটা হোক চলে যাওয়ার পর টেবিল-চেয়ার গুলো স্যানিটাইজ করতে হবে।
*ফুড কোর্টে খাবার পরিবেশনকারীদের মাস্ক পড়া বা অন্যান্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ বাধ্যতামূলক।
*ফুডকোর্টের রান্নাঘরেও কর্মীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
২৬) সম্ভব হলে মলে আগতদের প্রত্যেকের ওপর কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হবে।
২৭) মলে আগত কোন ব্যক্তির করোনার উপসর্গ আছে বা করোনা পজিটিভ, কোনভাবে এমন খবর থাকলে সেই মল সম্পূর্ণভাবে স্যানিটাইজ করতে হবে।