নেপাল: কুম্ভমেলায় যোগ পুণ্য অর্জন করে দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন নেপালের প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ এবং রানি কোমল।সঙ্গে নিয়ে ফিরলেন করোনা৷ মঙ্গলবার তাঁদের করোনার পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
মানুষের বিশ্বাস, কেউ পুণ্য তীর্থ থেকে ফিরলে, তাঁকে প্রণাম করলেই বাকিদের পুণ্য অর্জন হয়৷ সেই উদ্দেশ্যেই তাঁদের স্বাগত জানাতে ভারত থেকে দেশে ফেরার দিন বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়েছিলেন কয়োকশো মানুষ। রাজা-রানির করোনা ধরা পড়ার পর তাঁদেরও পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে নেপালের সংবাদমাধ্যমের তরফে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতিতে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে ১ এপ্রিল থেকে কুম্ভমেলা শুরু হয়। যদিও দেশে করোনা সংক্রমণ ভয়ঙ্কর ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে দেখেও এভাবে কুম্ভমেলার আয়োজন নিয়ে শুরু থেকেই সমালোচনার মুখে পড়তে হয় উত্তরাখণ্ড সরকারকে। কুম্ভমেলায় একের পর এক সাধুদের আখড়ায় করোনা ধরা পড়েছে। এমনকী কুম্ভ থেকে ফিরলেই বাধ্যতামূলক ভাবে করোনা পরীক্ষার কথাও বলেছে কয়েকটি রাজ্য।
এই অবস্থাতেই হরিদ্বারে কুম্ভমেলায় যোগ দিয়ে পুণ্যার্জনের লক্ষ্যে হরকিপৌরিতে গঙ্গায় ডুব দেন বছর তিয়াত্তরের জ্ঞানেন্দ্র এবং সত্তরের কোমল। দেশে ফিরতেই নেপালের প্রাক্তন রাজা-রানিকে সাদর অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে কয়েকশো মানুষ জমায়েত হন৷ কিন্তু মঙ্গলবার তাঁদের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসায় সেখানে উপস্থিতদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। নেপালের সংবাদপত্র দ্য হিমালয়ান টাইমস জানিয়েছে, খুঁজে দেখা হচ্ছে কারা কারা সরাসরি রাজা-রানির সংস্পর্শে এসেছিলেন।
২০০১ সালে নেপালের রাজপ্রাসাদে হত্যালীলায় মৃত্যু হয় তৎকালীন রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ-সহ বেশ কয়েক জনের। সেই হত্যাকাণ্ডের পিছনে বীরেন্দ্রর ছেলে দীপেন্দ্রর হাত রয়েছে বলে মনে করা হয়। বীরেন্দ্রও আত্মহত্যা করেন বলে জানা যায়। তার পর রাজা হন বীরেন্দ্রর ভাই জ্ঞানেন্দ্র। ২০০৮ সালে গণবিদ্রোহের মুখে পড়ে তিনি ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। রাজতন্ত্রের অবসান হয়ে নেপালে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়। এখন রাজা জ্ঞানেন্দ্র খুব বেশি জনসমক্ষে আসেন না। এবার তাঁর করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় আতঙ্কিত নেপালের রাজপ্রাসাদের বাসিন্দারাও।