নয়া শিক্ষানীতিতে কোন কোন বিষয়ে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে? বললেন প্রধানমন্ত্রী

নয়া শিক্ষানীতিতে কোন কোন বিষয়ে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে? বললেন প্রধানমন্ত্রী

 

নয়াদিল্লি: দেশের প্রতিটি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য, শিক্ষামন্ত্রী ও রাজ্যপালদের সঙ্গে নিয়ে সোমবার শিক্ষানীতি নিয়ে ভার্চুয়াল সভা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ এই আলোচনাসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের আকাঙ্খা পূরণ করার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হল শিক্ষানীতি এবং শিক্ষা ব্যবস্থা৷ প্রতিভা ও প্রযুক্তির মেলবন্ধন করার চেষ্টা করা হয়েছে নয়া শিক্ষানীতিতে৷ জাতীয় শিক্ষানীতিতে ন্যূনতম সরকারি হস্তক্ষেপের পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি৷ 

নমো বলেন, নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি এবং এর রুপায়ণ নিয়ে সারা দেশে ব্যপক আলোচনা চলছে৷ জাতীয় শিক্ষা নীতি কেবলমাত্র পড়াশোনার পদ্ধতিতেই বদল আনবে না, এই নীতি ২১ শতকের ভারতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনকে নতুন দিশা দেখাবে৷  আত্মনির্ভর ভারতের সংকল্প আর সামর্থকে নতুন রূপ দেবে৷ স্বাভাবিকভাবেই এই বড় সংকল্পের জন্য আমাদের প্রস্তুতিও বড় হতে হবে৷ 

আরও পড়ুন- ৩৭৭ রুখেছিলেন তাঁরা, এবার শুরু সমকামী বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার লড়াই

তাঁর কথায়, এই শিক্ষা নীতি দেশের যুব সম্প্রদায়কে বিশ্বের চাহিদা মোতাবেক জ্ঞান ও দক্ষতার মাপকাঠিতে প্রস্তুত করবে৷ নয়া শিক্ষানীতি স্টাডির বদলে লার্নিং-এর উপর ফোকাস করবে৷ ছাত্ররা জটিল চিন্তাভাবনা করতে শিখবে৷ নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে ‘প্যাশন, প্র্যাকটিক্যালিটি আর পারফরম্যান্সের’ উপর জোড় দেওয়া হয়েছে৷ প্রথমিক স্তরে শিক্ষায় স্থানীয় ভাষার উপরে জোড় দেওয়া হয়েছে৷ জোড় দেওয়া হয়েছে টিচার্স ট্রেনিংয়ের উপরেও৷ অ্যাকসেস এবং মূল্যায়নের উপরেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ 

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ দিন ধরেই ছেলেমেয়েরা ব্যাগ আর বোর্ড পরীক্ষার বোঝার নীচে, পরিবার আর সমাজের চাপে নুইয়ে পড়েছে৷ নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে এই বিষয়ে সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করা হয়েছে৷ বলা হয়, শিক্ষা আমাদের মনকে মুক্ত করে৷ প্রাথমিক স্তরেই শিশুদের তাদের সংস্কৃতি, ভাষা, পরম্পরার সঙ্গে যুক্ত করায় চেষ্টা করা হয়েছে নয়া শিক্ষানীতিতে৷ কোনও রকম চাপ ও প্রভাব ছাড়াই লোকতান্ত্রিক মূল্যকে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার অংশ করে তুলেছি৷  

পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষায় শিক্ষা বাধ্যতামূলক। কারোর উপর জোর করে কোনও ভাষা চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষা ঐচ্ছিক। দ্বাদশ শ্রণিতে বোর্ডের পরীক্ষায় ৮টি সেমিস্টারের প্রস্তাব করা হয়েছে৷  

আরও পড়ুন- ‘অনন্য’ এক কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান দিলেন ভারতীয় বিজ্ঞানী, যা বদলে দেবে মহাকাশের ধারণা

বিদেশনীতি, প্রতিরক্ষানীতি যেমন দেশের হয়, এই শিক্ষানীতিও দেশের। এটা কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের নয়। টেকনলজির বিস্তার গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দিচ্ছি আমরা। সেভাবেই দেশের কোণায় কোণায় জ্ঞান পৌঁছে দিতে হবে আমাদের। বিশ্ব চাকরির বাজারেও ভারতের বিশেষ অবদান থাকবে৷ এই শিক্ষানীতিতে পড়ুয়াদের মুখস্থ বিদ্যার বদলে হাতেকলমে শিক্ষায় জোর দেওয়া হবে। আত্মনির্ভর ভারত তৈরির জন্য ছাত্রদের দক্ষতা বাড়ানো খুবই প্রয়োজন৷

নয়া শিক্ষানীতিতে উচ্চশিক্ষাতেও আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ অ্যাকাডেমিক ব্যাঙ্ক অফ ক্রেডিট থেকেও উপকৃত হবেন পড়ুয়ারা৷ স্নাতক স্তরে অনার্স কোর্স ৪ বছর পর্যন্ত হতে পারে। তবে প্রতি বছরের শেষে পড়ুয়ারা পাবেন সার্টিফিকেট। কোর্স শুরুর ১২ মাসের মধ্যে পড়াশোনা ছেড়ে দিলে পড়ুয়া পাবেন ভোকেশনাল কোর্সের সার্টিফিকেট। দুবছর বা ২৪ মাস পর ছাড়লে ফিলবে ডিপ্লোমার সার্টিফিকেট। আর চার বছরের কোর্স করলে পাওয়া যাবে ডিগ্রি কোর্সের সার্টিফিকেট। ফলে চাকরির ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।

এছাড়াও দশম শ্রেণির পর কলা বিভাগ, বিজ্ঞান বিভাগ বা বাণিজ্য বিভাগের তফাৎ উঠে যাচ্ছে। পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়লেও, পাশে রাখা যাব সংগীত। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন নিয়ে পড়লেও, ফ্যাশন ডিজাইনিং পড়ার সুযোগ থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − 6 =