হরিয়ানা: ভোটের মুখে ফের পদ্ম শিবিরে কালির ছিটে৷ পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই বলে যখন সরব গেরুয়া ব্রিগেড, ঠিক তখন সামনে এল বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় কীভাবে পুলিশি নির্যাতনের শিকার বছর চব্বিশের মহিলা সমাজকর্মী৷
দিন দু’য়েক আগেই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন শ্রমিক ও দলিত অধিকার নিয়ে আন্দোলন করা সমাজকর্মী নদীপ কৌর। সম্প্রতি তিনি কৃষি বিল বিরোধী আন্দোলনের পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন গঠন করতে সক্ষম হয়েছিলেন৷ বিজেপি সরকারের পুলিশ কীভাবে তাঁর ওপর অকথ্য অত্যাচার করেছে, সেকথা প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে৷
পুলিশি হেফাজতে নদীপের ওপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন বিভিন্ন সমাজকর্মীরা। কিন্তু কিছুতেই জামিন পাচ্ছিলেন না নদীপ৷ শুক্রবার আদালতের তরফে জানানো হয়, নদীপের ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬০ ধারার অধীনে খারাপ আচরণ বা শৃঙ্খলাভঙ্গের কোনও রেকর্ড মেলেনি। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি জামিন পেয়েছেন৷ জামিনে মুক্তি পেতেই পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর ওপর হওয়া অত্যাচারের কথা সংবাদমাধ্যমের তুলে ধরেন৷ এমনকী তাঁর দলিত সত্ত্বা নিয়ে প্রশ্ন তুলেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
নদীপ আরও অভিযোগ করেন, গত ১২ জানুয়ারি তাঁকে গ্রেফতার করে কুন্দলি থানায় নিয়ে যাওয়ার সময়ও তিনি নির্যাতনের শিকার হন। একাধিক পুলিশ কনস্টেবল তাঁর চুল ধরে হিড়হিড় করে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে তোলেন বলেও অভিযোগ৷ এমনকী থানায় নিয়ে আসার পথে রাস্তাতেও চলে নির্যাতন। এদিন পুলিশি অত্যাচারের কথা বলতে গিয়ে বারবার শিউরে ওঠেন নদীপ। অভিযোগ, লাঠি, জুতো দিয়ে তাঁর গোপনাঙ্গেও তীব্র ভাবে আঘাত করে পুলিশ। অসহ্য যন্ত্রণায় কাতর হলেও রেহাই মেলেনি রক্তাক্ত নদীপের। এরপর পরবর্তী থানায় নিয়ে এসেও অত্যাচারের হাত থেকে তিনি মুক্তি পাননি বলেও অভিযোগ। সেই সময় থানায় কোনও মহিলা পুলিশকর্মী উপস্থিত ছিলেন না বলেও জানান নদীপ।
প্রসঙ্গত, তাঁর বিরুদ্ধে তোলাবাজি এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু করেছিল হরিয়ানা পুলিশ। যদিও নদীপ জানান, হরিয়ানা সরকারের চক্রান্তের জেরেই তাঁর বিরুদ্ধে সাজানো মামলা রুজু করে হরিয়ানা পুলিশ। এমনকী গ্রেফাতারির সময় শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঢাকতে তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষাও করা হয়নি বলেই জানান তিনি। যাতে ফৌজদারি আইনের ৫৪ নম্বর ধারার লঙ্ঘিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।