নয়াদিল্লি: কভিড-১৯ এর ধাক্কায় থমকে গিয়েছে গোটা বিশ্বের অর্থনীতির গতি৷ প্রায় সারা বিশ্বজুড়ে চলছে লকডাউন৷ স্বেচ্ছায় আইসোলেশনে রয়েছে মানুষ৷ অফিসগুলিতে চালু হয়েছে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’৷ কোভিড-১৯ এর দাপটে ওলটপালট হয়ে গিয়েছে যাবতীয় হিসেবনিকেষ৷ করোনা বিপুল ভাবে আঘাত হেনেছে দেশের অর্থনীতির উপর৷ এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ভারতীয়দের আগামী ২-৩ বছর সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে বলে জানালেন ইনফোসিসের সহ প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তি৷
আগামী ৩ মে ভারতে লকডাউন ওঠার কথা৷ এর পরেও লকডাউনের মেয়াদ বাড়বে কিনা, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় দেশের মানুষ৷ করোনা ও লকডাউনের ধাক্কা কতটা সামলে উঠতে পারবে ভারতীয় অর্থনীতি? এই বিষয়ে নারায়ণ মূর্তি বলেন, এই ভাবে বেশি দিন লকডাউন করে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়৷ লকডাউন চলতে থাকলে না খেতে পেয়ে মরবে গরিব মানুষ৷ ভারতীয়দের এটা মেনে নিতে হবে যে, আগামী এক দেড় বছর তাঁদের করোনা নিয়েই বাঁচতে শিখতে হবে। সংস্থাগুলিকে আরও সাবধান হতে হবে, আরও বেশি করে পরিশ্রম করতে হবে, যাতে অর্থনীতি আবার পুরনো জায়গায় ফিরে আসে। এর জন্য সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে তাঁদের৷ তবে সোশ্যাল ডিস্টেনসিং মেনে কাজ করতে হবে৷ প্রয়োজনে কোম্পানিগুলিকে শিফটিং করে কাজ করাতে হবে৷
তিনি আরও বলেন, কারখানা প্রতিষ্ঠান আগে যাচাই করে দেখতে হবে কোন জায়গায় করোনার আশঙ্কা কম, কোথায় বেশি৷ সেই বুঝে গড়ে তুলতে হবে কলকারখানা৷ বয়স্কদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি৷ কোম্পানিগুলিকেও ভাবতে হবে, কীভাবে কর্মীদের আরও ভালভাবে নিরাপত্ত দেওয়া যায়। এর জন্য হাতের দস্তানা, মাস্ক, গগলস- যা যা প্রয়োজন কর্মীদের সেগুলি দেওয়ার বন্দোবস্ত করতে হবে৷ বয়স্কদের জন্য ওয়ার্ক ফ্রম হোমই ভালো৷ তথ্যের উপর ভিত্তি করে কাজ করতে হবে৷
মূর্তি বলেন, যদি দিনে এক লাখ মানুষেরও করোনা পরীক্ষা হয়, তবে সবার পরীক্ষা শেষ হতে হতে ৩৭ বছর কেটে যাবে। আগামী এক দেড় বছর যে এই রোগের সঙ্গে কাটাতে হবে তা মেনে নেওয়ার সময় এসে গিয়েছে৷ পাশাপাশি সরকারেরও উচিত, সম্মানীত অভিজ্ঞ মানুষদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা, যারা দেখবে কীভাবে সব রকম সমস্যা দূর করে সহজে ব্যবসা করা যায়৷ তিনি আরও বলেছেন, ছোট কোম্পানি আর স্টার্টআপের ক্ষেত্রে যাতে ব্যাংক থেকে সহজে ঋণ পাওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে৷ আগামী ৩-৬ মাস তাদের পক্ষে কাজ করা সহজ হবে।