নয়াদিল্লি: ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার লোকসভায় মোট কৃষি সংক্রান্ত বিল পাশ করিয়েছে কেন্দ্র। যা নিয়ে বিরোধী তথা শরীক অকালি দল প্রতিবাদ করেছে। অকালি দল এই নিয়ে মন্ত্রীসভা পরিত্যাগ করেছে বলেও জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে ক্রমশ৷ ফলে, খোদ প্রধানমন্ত্রী এবার ভাবমুর্তি বজায় রাখতে মাঠে নামলেন৷
এদিন রাতে প্রধানমন্ত্রী নিজে তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে চাষিদের উদ্দেশ্যে হিন্দিতে বার্তা দেন৷ তিনি বলেছেন, প্রস্তাবিত আইনগুলির ফলে দালালদের হাত থেকে রক্ষা পাবে কৃষিক্ষেত্র। অনেক দলই বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, কিন্তু ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ও সরকারি ক্রয়, উভয় চালু থাকবে। তিনি জানান, পাশাপাশি আনা হবে নতুন বিকল্প। এই আইনের ফলে কৃষকরা নিজেরা ঠিক করতে পারবেন, কোথায় তারা তাদের শস্য বিক্রি করতে চান। এর ফলে সামগ্রিক ভাবে কৃষকরা লাভবান হবেন৷ প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের অনুরোধ করেছেন, একবার কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমারের সংসদে দেওয়া বক্তব্যটি শোনার জন্য। সবশেষে তিনি বলেন, উন্নত প্রযুক্তি কৃষিক্ষেত্রে এলে চাষীদের হাতই শক্ত হবে।
বৃহস্পতিবার কৃষি সংক্রান্ত ৩টি বিল পাস হয়েছে লোকসভায়৷ ৩টি বিলের মধ্যে একটি বিলের লক্ষ্য, দেশের বর্তমান অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন সংশোধন করে বেশ কিছু কৃষিপণ্য মজুত রাখার ঊর্ধসীমা তুলে দেওয়া৷ তাতে যে কোনও ব্যক্তি ওই সমস্ত কৃষিপণ্য নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী মজুত করতে পারবে৷ তাতে বাজারে ওই সমস্ত পণ্যের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকছে৷ অন্য একটি বিলের লক্ষ্য, রাজ্যগুলিতে বর্তমানে কৃষিপণ্য বিপণন নিয়ে যে এপিএমসি আইন আছে তা দূর করে আন্তঃরাজ্য কৃষি পণ্যের বাণিজ্য অবাধ করা৷ তৃতীয় বিলটি বলা হয়েছে, রাজ্যগুলিতে চুক্তি ভিত্তিক চাষ ব্যবস্থাকে আইনসিদ্ধ করা৷
এনডিএ শরিক অকালি দল সংসদে এই বিলগুলিকে কৃষিবিরোধী বলে অভিযোগ করে। পরে অকালি সাংসদ হরসিমরত কৌর বাদল মন্ত্রিসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান। অন্যদিকে এই বিলের সমর্থনে কৃষিমন্ত্রী তোমার বলেছেন, এর ফলে চাষীদের ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিকল্প বাড়বে। দেশের যে কোনও জায়গাতে নিজেদের পণ্য ইচ্ছামতো বিক্রি করতে পারবেন চাষীরা।
তিনি আরও বলেন, আরেকটি বিল মারফত চাষীরা লিখিত চুক্তিতেই পূর্ব নির্ধারিত এই দামে সে নিজের ফসল বেচবে। সেক্ষেত্রে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য তুলে নেওয়া হচ্ছে না। যদিও তাতে ভয় কাটছে না চাষীদের একাংশের। পাশাপাশি কেন্দ্রের যুক্তিতে সহমত নয় কংগ্রেস, তৃণমূল সহ একাধিক বিরোধীরা। বিরোধীদের অনুমতি না থাকলে সরকার এই ৩ টি বিল কিভাবে রাজ্যসভায় পাশ করায়, তা লক্ষ্যনীয়।