কোহিমা: সাধারণ নাগরিকের ওপর গুলি চালানোর মতো ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে সেনাবাহিনী এবং তাই নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। কেন্দ্রীয় সরকার গতকাল এই ইস্যুতে বিবৃতি দিয়েছে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন বড় ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে এবং তা অত্যন্ত দুঃখজনক। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই এত বড় ঘটনার পর এই ধরনের বিবৃতি কোনরকম আবহাওয়া ঠান্ডা করতে পারছে না। ব্যাপক পরিমাণে চাপ বাড়ছে কেন্দ্রের ওপর। আগেই নাগাল্যান্ড পুলিশ গণহত্যার অভিযোগে স্পেশাল ফোর্সের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছিল। এবার নাগাল্যান্ড সরকার কেন্দ্রকে চিঠি লিখছে যাতে ‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা প্রত্যাহার করা হয়।
বহুদিন ধরেই এই আফস্পা নিয়ে বিরোধ হয়েছে উত্তর-পূর্বে। নাগাল্যান্ডের ঘটনার পর সেই দাবি আরো জোরালো হতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। রাজ্যের মন্ত্রিসভার বৈঠকে কেন্দ্রকে চিঠি লিখে এই নিয়ম প্রত্যাহারের দাবী জানানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন যে এর কারণ এই রাজ্যে অশান্তি বাড়ছে তাই আফস্পা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নাগাল্যান্ডের বিজেপি জোটের অন্যতম সঙ্গীও এই নিয়ম প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে তার মানে সে তার বিশাল তাৎপর্যপূর্ণ। তাই এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার এখন কী সিদ্ধান্ত নেয় তার দিকেই তাকিয়ে সকলে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকার নাগাল্যান্ড ইস্যু নিয়ে জানিয়েছে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে বিবৃতি দিয়ে জানান, শনিবার রাতে খনি শ্রমিকদের গাড়িতে সেনা গুলি চালিয়েছিল তাদের জঙ্গি মনে করে। এরপর গ্রামবাসীরা অসম রাইফেলসের শিবিরে চড়াও হলে জওয়ানরা আত্মরক্ষার্থে গুলি চালান। সেখানেও একাধিক গ্রামবাসীর মৃত্যু হয় এবং একজন সেনার মৃত্যু ঘটে। গোটা ঘটনাকেই প্রচন্ড দুঃখজনক ব্যাখ্যা দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশেষ তদন্তকারী দল তদন্ত করবে এবং আগামী এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে তাদের। প্রসঙ্গত, রাতের অন্ধকারে নাগাল্যান্ডের ওটিং গ্রাম থেকে একটি পিকআপ ভ্যানে চেপে ফিরছিলেন গ্রামবাসীরা। সন্ত্রাসবাদী ভেবে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় নিরাপত্তাবাহিনী। গ্রামবাসীদের কথায়, নিহত গ্রামবাসীরা খনি থেকে কাজ সেরে রাতে ঘরে ফিরছিলেন৷