নয়াদিল্লি: ফের বিতর্কে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত৷ ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হওয়া সত্বেও এখানে সব থেকে বেশি সুখী মুসলমানরা৷ মোহন ভাগবতের এই মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷
শনিবার ওড়িশায় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে মোহন ভাগবত জানিয়েছেন, ‘‘ওরা ভাবে ভারতে খুব দুঃখে কষ্টে আছেন৷ কিন্তু এটা ভুল৷ আমরা জাতি-বর্ণহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে৷ আমরা আমাদের দেশের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছি৷ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধেও আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে তৎপর হয়েছি৷ আমাদের ভারতবর্ষ হিন্দুরাষ্ট্র৷ হিন্দু রাষ্ট্রে পুজোপাঠ কোনও বিধিনিষেধ নেই৷ হিন্দু একটি সংস্কৃতি হিসাবে প্রতিপালিত হচ্ছে৷ এটা সম্ভব হয়েছে সমস্ত ধর্মের মানুষের জন্যই৷ হিন্দুত্ব বিভিন্ন ধর্মেকে সম্মান করছে৷ গোটা দুনিয়ায় একমাত্র ভারত, যারা হিন্দু রাষ্ট্র হয়েও অন্য ধর্মকে সমান চোখে দেখে৷ বিশ্বের একমাত্র ভারতবর্ষে সত্যের প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷ বিশ্বের সব থেকে সুখী মুসলিম ভারতবর্ষে বসবাস করছেন৷ এটা কেন হচ্ছে? কারণ আমরা হিন্দু৷ সবাইকে গ্রহণ করতে জানি৷ এটাই আমাদের হিন্দুত্ব৷’’
Mohan Bhagwat, RSS: …Maare-maare Yahudi (Jews) firte they akela Bharat hai jahan unko ashray mila. Parsion (Parsis) ki puja aur mool dharma sukrakshit kewal Bharat mein hai. Vishwa mein sarvadhik sukhi Musalman, Bharat mein milega. Ye kyun hai? Kyunki hum Hindu hain…” (12.10) pic.twitter.com/btO3Zdixgz
— ANI (@ANI) October 13, 2019
কিন্তু ভারত কখন হিন্দু রাষ্ট্র নয়৷ সংবিধানেও তা মান্যতা দেওয়া হয়নি৷ সংবিধান অনুযায়ী ভারত সর্বধর্মের দেশ হিসেবে বিবেচিত৷ সংবিধান অনুযায়ী ভারত কোনও ধর্মের পক্ষে ও বিপক্ষে মাথা গলাবে না বলে উল্লেখ করা আছে৷ কিন্তু তারপরেও আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের হিন্দু রাষ্ট্রের দাবি ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক৷ কিন্তু, এই ভারতে কেমন আছেন মুসলিমরা? ২০১৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি ভারতে মুসলিমদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা খতিয়ে দেখে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সংস্থা৷ সেই রিপোর্টে ২০১৫ সালের হিসেব অনুযায়ী, উচ্চপদস্থ সরকারি চাকরিতে মুসলিম প্রতিনিধিত্ব মাত্র ৫.৪৭ শতাংশ৷ ২০১৩-২০১৪ আর্থিক বছরের এরাজ্যে সরকারি চাকরিপ্রাপ্ত মুসলিমের সংখ্যা ১৯৩৪২ জন৷ ২০০৫ সালে গঠিত সাচার কমিটি জানিয়েছে, মানব উন্নয়নে মুসলিমরা পিছিয়ে৷ তারপরও ভাগবতের ‘সুখী’ মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷