নয়াদিল্লি: মায়ের পরশ থেকে বঞ্চিত মাত্র ৩০ দিনের শিশু৷ করোনা মহামারী মা-সন্তানের মধ্যে তৈরি করে দিয়েছে হাজার কিলোমিটারের দূরত্ব৷ কিন্তু, হাজার কিমির শারীরিক দূরত্ব থাকলেও মায়ের দুধ থেকে শিশুকে বঞ্চিত হতে হয়নি৷ স্রেফ ইচ্ছাশক্তির জোরে প্রতিদিন হাজার কিমি পাড়ি দিয়ে মাতৃদুগ্ধ পৌঁছাচ্ছে শিশুর কাছে৷ মায়ের পরশ না পেলেও হাজার কিমি দূর থেকে পাঠানো মায়ের দুধ খেয়ে আপাতত দিব্যু আছে ৩০ দিনের শিশু৷
জামা গিয়েছে, গত ১৬ জুন জম্মু ও কাশ্মীরে একটি হাসপাতালে জন্ম হয় ওই শিশুটির৷ জন্মের পর মা দোরজে পালমো খেয়াল করেন, শিশু নিজে থেকে দুধ টানতে পারছে না৷ তড়িঘড়ি যান চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে৷ পরে চিকিৎসকদের কথা মতো দু’দিন পর অসুস্থ শিশুটিকে নিয়ে দিল্লি পৌঁছন৷ মাইসুরুর কর্মস্থল থেকে দিল্লি চলে আসেন বাবা জিকমেত ওয়াংসুক৷ পরে ওই শিশুকে শালিমার বাগের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়৷
চিকিৎসার পর শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, শিশুটি বিরল রোগে আক্রান্ত৷ খাদ্যনালী ও শ্বাসনালী একসঙ্গে জুড়ে থাকার কারণে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে৷ শিশুটিকে সুস্থ করতে মায়ের দুধের প্রয়োজন বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়৷ কিন্তু, করোনা সংক্রমণের ভয়ে মাকে দিল্লি আনা সম্ভব ছিল না৷ কিন্তু, কাশ্মীর থেকে দিল্লি, কীভাবে আসবে মায়ের দুধ? এই কঠিন সময়ে সাহায্যের হাত বাড়ান লেহ বিমানবন্দরে কর্মরত ওয়াংদুসের কয়েকজন বন্ধু৷
গোটা বিষয়টি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি বেসরকারি সংস্থার বিমানে রোজ বাক্সবন্দি মায়ের দুধ দিল্লি এসে পৌঁছয়৷ আর প্রতিদিন কোনও না কোনও যাত্রী তা নিয়ে আসেন৷ ফলে, উড়ান সংস্থা গুনতে হয় না কোনও টাকা৷ প্রতিদিন একই সময়ে দিল্লি বিমানবন্দরের একটি নির্দিষ্ট স্থানে অপেক্ষা করেন ওয়াংদুস৷ গত এক মাস ধরে চলছে এই রুটিন কাজ৷ মায়ের পাঠানো দুধ খেয়ে এখন ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে শিশুটিও৷