তেলঙ্গানা: একুশ শতকের সভ্যতায় মানুষ পৌঁছে গেছে চাঁদে, ছুঁয়ে এসেছে মঙ্গলের মাটিও, কিন্তু মধ্যযুগ আর তার সংস্কারের কবল থেকে মানুষ কতটা বেরোতে পেরেছে আজও তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয় মাঝে মাঝেই। ভারতেরই নানা প্রান্ত থেকে আজও উঠে আসে উদ্ভট কিছু খবর, যা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় বিজ্ঞানমনস্ক আধুনিক মানুষের। মধ্যযুগ ছেড়ে কি আদেও বেরিয়েছি আমরা? অন্ধ্রপ্রদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা আরো একবার তুলে দিয়েছে সেই প্রশ্নই।
কলিযুগের পাপ মোচন করতে নিজেদের দুই কন্যা সন্তানকে বলি দিয়েছেন মা বাবা, সত্য যুগে তাঁদের মেয়েরা আবার জন্ম নেবে, এমনটাই বিশ্বাস তাঁদের। শুধু তাই নয়, মেয়েদের মৃতদেহের সামনে দাঁড়িয়েই বিলাপ তো দূর, রীতিমতো উল্লাস করতে দেখা গেছে ওই দম্পতিকে, জানিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের পুলিশ। ঘোরের মধ্যেই নাকি নাচ গানও করছিলেন তরুণীদের মা। অন্ধ্রপ্রদেশের এই ঘটনা যেন একুশ শতকের বিজ্ঞান প্রযুক্তির দাপটকে বড়সড় প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বীভৎসতায় শিহরিত হয়েছে গোটা দেশ।
বস্তুত, ঘটনাটি ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশের মদনপল্লী পুলিশ স্টেশনের অন্তর্গত একটি গ্রামে। মঙ্গলবার নিজের দুই মেয়েকে খুন করার অভিযোগে মদনপল্লী পুলিশ ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান তান্ত্রিকদের প্রভাবেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন ওই দম্পতি। পুলিশ সূত্রের খবরে জানা গেছে, গ্রেফতারির আগে দুই মেয়ের মৃতদেহের সামনে একপ্রকার ঘোরের মধ্যে ছিলেন বাবা মা দুজনেই। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই বাবা ডঃ পুরুষোত্তম নাইডুর সম্বিত ফিরলেও অদ্ভুত আচরণ করতেই থাকেন মহিলা পদ্মজা।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত মহিলা মেয়েদের দেহের সামনে দাঁড়িয়েই নাচ গান করছিলেন। সেই সঙ্গে চিৎকার করে তিনি বলছিলেন, করোনা ভাইরাস চিনে উৎপন্ন হয় নি, ঈশ্বরই কলি যুগের কালিমা দূর করতে এই ভাইরাস সৃষ্টি করেছেন। পাগলামির শেষ হয় নি এখানেও, থানায় গিয়ে করোনা পরীক্ষা করার সময়ও বারবার তিনি বলে চলেছিলেন তিনি নিজেই করোনা ভাইরাসের প্রতিমূর্তি। ওই মহিলার মেডিকাল পরীক্ষা করাতে যে বেশ বেগ পেতে হয়েছে পুলিশ আর ডাক্তারদের তা স্বীকার করেছেন মদনপল্লী থানার ডিএসপিওডিএসপিও৷ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ধৃত দুই অভিযুক্তকেই বর্তমানে রাখা হয়েছে তিরুপতির সরকারি হাসপাতালের মানসিক চিকিৎসা বিভাগে।