অসুস্থ ছেলেকে দেখতে টানা ৫ দিন ১৮০০ কিমি বাইক চালিয়ে এলেন মা

অসুস্থ ছেলেকে দেখতে টানা ৫ দিন ১৮০০ কিমি বাইক চালিয়ে এলেন মা

জামশেদপুর:  লকডাইনের জেরে কাজ চলে গিয়েছে।  ট্রেন বন্ধ। ফিরতেও পারছেন না। এপাশে সঞ্চিত অর্থ  প্রায় শেষের দিকে। তার মধ্যেই খবর পেলেন গ্রামের বাড়িতে ছেলে অসুস্থ। মাকে দেখার জন্য ছটফট করছেন। আর কোনও কথা ভাবলেন না মা। বাড়িতে পুরনো মোটর বাইক বের করে ছেলেকে দেখতে পুণে থেকে জামশেদপুরের উদ্দেশে রওনা দিলেন। টানা পাঁচদিন বাইক চালানোর পর ১৮০০ কিলোমিটার অতিক্রম করে জামশেদপুরে ছেলেক কাছে পৌঁছলেন। পথের ধকল এক নিমেষে কেটে গেল পরিবারের কাছে ফিরে, পাঁচ বছরের ছেলেকে দেখতে পেয়ে।

জামশেদপুরের কাদমা এলাকার ভাটিয়া বস্তির বাসিন্দা সোনিয়া দাস।  ২৬ বছরের সোনিয়া কর্মসূত্রে পুণেতে থাকেন। লকডাউনের জেরে তাঁর চাকরি চলে গিয়েছে। আনলক পর্যায়ে পুণে থেকে জামশেদপুরের ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি। তাই তিনি বাধ্য হয়েই পুণেতে ছিলেন। এক সময় তাঁর স্বামী খবর দেন, তাঁদের পাঁচ বছরের ছেলের প্কচণ্ড জ্বর। সেই জ্বর কিছুতেই কমছে না। সে শিশু মাকে দেখার জন্য ছটফট করছে। সোনিয়া জানান, এরপর কিছুতেই স্থির থাতচে পারছিলাম না।

সোনিয়া বলেন, যে করেই হোক বাড়িতে ফিরতে চাইছিলাম আমি।  একদিকে ট্রেন বন্ধ। অন্য দিকে বিমানের টিকিট কেনার টাকা নেই।  একবার যে পায়ে হেঁটে যাওয়ার কথা ভাবিনি  তা নয়। তিনি বলেন, মহারাষ্ট্র সরকার বা ঝাড়খণ্ড সরকারের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।  বাড়িতে থাকা পুরনো বাইকের দিকে চোখ পড়ল। এরপরেই ঠিক করেন বাইকে করে তিনি যাবেন।

কিন্তু এতটা রাস্তা ভয়তো পেয়েছিলে, রাস্তাঘাটে বিপদ, রাতে মাথা গোঁজার ঠাঁই, খাবার নাও পেতে পারেন। সব আশঙ্কাকে দূরে সরিয়ে রেখে তিনি রওনা দেন। জামশেদ পুরে এসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। তিনি বলেন, অ্যান্টিজেন টেস্ট হয়েছে। রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তবে ১৫ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তা হোক, তিনি যে  ছেলের সঙ্গে পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারবেন, তাতেই তিনি স্বস্তি পেয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six + four =