নয়াদিল্লি: ৫৯টি চিনা মোবাইল ফোন এপ্লিকেশন (app)-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। কোনও সন্দেহ নেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা Line of Actual Control (LAC) বরাবর চিনা সন্ত্রাসের যোগ্য জবাব দিতেই যে এই সিদ্ধান্ত তা বুঝতে ভাল ছাত্রছাত্রী হওয়ার প্রয়োজন নেই। বয়কটের মাধ্যমে চিনা অর্থনীতিকে রক্তাক্ত করতে চায় ভারত। শুরু হয়ে গিয়েছে সেই পক্রিয়া। ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় চুক্তি হারিয়েছে চিনা কোম্পানি। তবে, চিনা মোবাইল app এর বিরুদ্ধে মোদি সরকারের এই পদক্ষেপ সুদীর্ঘ চিন্তা ভাবনার ফসল বলেই মনে করা হচ্ছে।
চিনা app নিষিদ্ধ করে চিনের কী ক্ষতি করা যেতে পারে? তথ্য বলছে, এই চিনা app গুলির প্রধান সাবস্ক্রাইবার বেস হল ভারত। ভারতেই তাদের ৪০-৬০ শতাংশ সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। ৩০-৪০ শতাংশ রোজগার ভারতের বাজার থেকেই করে এই চিনা app গুলি। গত সেপ্টেম্বরে পর্যন্ত টিকটক ভারত থেকে ১০০ কোটি রোজগারের লক্ষে ছিল। আপাতত এসব ভুলতে হবে।
চিনা কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত সরকারের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি কোম্পানিকে সরকারের কাছে গ্রাহকদের ডেটা বা তথ্য জমা রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি চিনা app আপনার তথ্য হাতের মুঠোয় পেয়ে যাচ্ছে খুব সহজেই। মনে রাখতে হবে, সাধারণ যে কোনও app এর তুলনায় চিনা app ৪৫ শতাংশ বেশি তথ্য দাবি করে। লোকেশন, কন্টাক্ট একসেস – সবকিছু। কারণ জানা নেই। সেটাই রহস্য। সম্প্রতি ভারতীয় সেনা তাদের পরিবার গুলিতে চিনা app বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
সাধারণত, যেকোন app ডাউনলোড করলে সেই app আপনার থেকে কিছু তথ্য দাবি করে। আপনার মোবাইল স্ক্রিনে সেই নোটিফিকেশন ভেসে ওঠে। 'ওকে' বাটন টিপে আপনি প্রতিবার সেই তথ্য দিয়ে দেন permission allow এর মাধ্যমে। এখানে মনে রাখা প্রয়োজন, শুধু যে ছবি বা ভিডিও আপনি ওই app এ পোস্ট করতে চান, শুধু তা-ই প্রকাশিত হল না, মোবাইলের সমস্ত ডাটা, ছবি (হতে পারে ব্যাক্তিগত) সেই চিনা কোম্পানির হাতে চলে গেল। অনেকের মোবাইলেই ব্যাংক একাউন্ট বা আধার কার্ডের নম্বর থাকে। সেক্ষেত্রে তাও app এর মাধ্যমে চলে যায় কিনা তা প্রশ্ন উঠেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলেন, ডাটা বা তথ্য পেট্রোল এর মত মূল্যবান। এমন দিন আসছে, যেদিন যে দেশের হাতে ডাটা বেশি থাকবে , সেই দেশ তত বেশি শক্তিশালি হবে। ২০১৭ সালে বিশ্বের সেরা ১০০ টি app এর মধ্যে ১৮টি চিনা app ছিল। ২০১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪টি। সাধু সাবধান।