নয়াদিল্লি: করোনাকালে সংক্রমণ রুখতে দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল রেল পরিষেবা৷ পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটায় যাত্রী চাহিদা সামাল দিতে চালু হয় বেশ কিছু ‘স্পেশাল ট্রেন’৷ কিন্তু এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি পরিষেবা৷ অধিকাংশ দূরপাল্লার ট্রেনই বাতিল রয়েছে৷ যার জেরে রেলের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলে সূত্রের খবর৷ এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতি সামলে উঠতে কোপ পড়েছে বিশেষ ছাড়ে৷ রেলকর্মী ও সাধারণ যাত্রীদের জন্য নির্ধারিত দেড়শো’র বেশি ছাড় বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ ফলে ভ্রমণ খরচ এবার অনেকটাই বাড়ল সাধারণ যাত্রীদের৷
আরও পড়ুন- ২ সপ্তাহের মধ্যেই কোভিশিল্ডের জরুরি ব্যবহারের জন্য কেন্দ্রকে আবেদন করবে সিরাম ইনস্টিটিউড
এতদিন প্রবীণ নাগরিকরা রেলের টিকিটে বিশেষ ছাড় পেতেন৷ কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই ছাড় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী মহিলাও ট্রেন সফরের বেশ কিছুটা ছাড় পেতেন৷ সেই ছাড়ও আপাতত বন্ধ৷ লকডাউনের সরাসরি প্রভাব পড়েছে রেলের ভাঁড়ারে৷ বিপুল পরিমাণ ক্ষতি সামাল দিতেই সব রকম ছাড় বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে রেল৷ শুধু সাধারণ যাত্রীদের উপরেই কোপ পড়েনি৷ কোপ পড়েছে খোদ রেলের ঘরেও৷ কর্মীরা এতদিন যে ৬৪ রকমের ভাতা পেতেন, তার ৫০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ এর মধ্যে রয়েছে নাইট ডিউটি অ্যালাওয়েন্স, স্পেশাল হলিডে, হাউস রেন্ট, চাইল্ড এডুকেশনের মতো সংবেদনশীল ভাতাগুলি৷ রেলের এই সিদ্ধান্ত স্বভাবতই কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে৷ রেল কর্মীদের সর্বভারতীয় সংগঠন অল ইন্ডিয়া রেলওয়ে মেনস ফেডারেশনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক শিবগোপাল মিশ্রর কথায়, ‘‘৫০-৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রেলকর্মীরা এই ভাতা পেয়ে আসছেন৷ তাঁদের প্রাপ্ত ভাতা বন্ধ করে রেলের ঐতিহ্যকেই অসম্মান করা হয়েছে৷ সরকারকে এর মূল্য দিতে হবে৷’’
আরও পড়ুন- আন্তর্জাতিক সীমান্তে ড্রোনের আনাগোনা, ভারতীয় জওয়ানের গুলিতে ফিরল পাকিস্তানে
আবার পূর্ব রেলের শ্রমিক সংগঠন ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র টিকিট বিক্রি বাবদ ৪০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে৷ রেলের অপারেটিং রেশিও ৯৮.৪৷ অর্থাৎ ১০০ টাকা উপার্জন করতে রেলকে ব্যয় করতে হয় ৯৮.৪ টাকা৷ এই হিসাব অনুযায়ী লকডাউনের মধ্যে শুধু টিকিট বিক্রি করে ৪ হাজার কোটি টাকা লাভ করতে পারত৷ রেলের এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতি সামাল দিতেই এই সিদ্ধান্ত৷