স্বাধীন ভারতে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হ্রাস, গ্রেফতার ৫০-এর বেশি সাংবাদিক

স্বাধীন ভারতে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হ্রাস, গ্রেফতার ৫০-এর বেশি সাংবাদিক

 

নয়াদিল্লি: সারা দেশে বিদ্যুৎগতিতে বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমণ৷ এই অবস্থায় ভুল তথ্য পরিবেশনের অভিযোগে একাধিক মিডিয়া হাউজের  নিউজ কভারেজ বন্ধ করে দিচ্ছে সরকার৷ স্বাধীন ভারতে সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে৷ 

আরও পড়ুন- যে কোনও সময় ঘটতে পারে গালওয়ানের পুনরাবৃত্তি, সীমান্তে টহল নিয়ে আলোচনা

 

এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০ জনেরও বেশি সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে অথবা তাঁদের নামে থানায় অভিযোগ করে হয়েছে৷ কেউ কেউ আবার শারীরিক নির্যাতনের শিকার৷ তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ভারতের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে কাজ করা স্বাধীন সাংবাদিক৷ হিমাচলপ্রদেশের একটি হিন্দি দৈনিকের সাংবাদিক ওম শর্মা বলেন, ‘‘আসলে এর মাধ্যমে পরোক্ষে একটি বার্তা দেওয়া হচ্ছে৷ যাতে আমরা কোনও ভাবেই সরকারের সমালোচনা বা তার খারাপ দিকটা তুলে না ধরি৷ চোখে দেখার পরও আমাদের অন্ধ হয়ে থাকতে হবে৷’’

একটি ফেসবুক লাইভ রিপোর্টের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ৷ ওই রিপোর্টে লকডাউনে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের অসহায় অবস্থার কথা তুলে ধরেছিলেন তিনি৷ তাঁরা যে খাদ্য সংকটে ভুগছেন সেই ছবিটি উঠে এসেছিল তাঁর রিপোর্টে৷ এর পরই পুলিশ-প্রশাসনের রোষের মুখে পড়েন শর্মা৷  তাঁর বিরুদ্ধে ভুল খবর পরিবেশন, সরকারি কর্মচারীর আদেশ অমান্য করা এবং ভয়াবহ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার মতো দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করার অভিযোগ আনা হয়৷  

আরও পড়ুন- পে কমিশন: আরও বেশি DA পেতে পারেন সরকারি কর্মচারীরা

 

দীর্ঘ লকডাউনে দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে৷ বারবার চোখের সামনে ভেসে এসেছে বৈষম্য৷ এক শ্রেণির মানুষের কঠিন সংগ্রাম৷ করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন জারি হতেই রাতারাতি কাজ হারান লক্ষ লক্ষ মানুষ৷ 

আরও পড়ুন- সবজি বিক্রেতার হাত থেকে খাবার খাচ্ছে ময়ূর, ভাইরাল ভিডিও

লকডাউন ঘোষণার আগে দেশের বৃহত্তম ২০টি প্রিন্ট মিডিয়ার এডিটরের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘‘ হতাশাবাদ, নেতিবাচকতা এবং গুজব ছড়িয়ে পড়া মোকাবিলা করা গুরুত্বপূর্ণ৷’’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে করোনা মোকাবিলা করেছেন, তার জন্য বিভিন্ন মহলে তিনি সমালোচিত হন৷ যার জেরে নিজেদের নীতিরও বদল করে কেন্দ্র৷ কিন্তু করোনা সংক্রমণ রুখতে তিনি ব্যর্থ৷ আজ আমেরিকা আর ব্রাজিলের পর আক্রান্তের বিচারে তিন নম্বরে উঠে এসেছে ভারত৷ 

আরও পড়ুন- দেশের করোনা পরিস্থিতি কি এই মুহূর্তে আরও জটিল এবং ভয়ংকর?

 

কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল, ভুল খবরের জেরে পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকটা ভুগতে হয়েছে৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ অন্যদিকে, সাংবাদিকদের অভিযোগ তাঁদের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে৷ শর্মা স্থানীয় প্রশাসনের কার্ফু পাস নিতে অস্বীকার করেছিলেন৷ ওয়ার্ক ফ্রম হোম ছাড়া তাঁর কোনও উপায় ছিল না৷ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের উপর ভরসা করেই স্থানীয় মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরেছিলেন তিনি৷ যের মাশুল গুণতে হচ্ছে তাঁকে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *