করোনা রুখতে মোদী-মমতার বৈঠক, নয়া মন্ত্র দিলেন নমো

করোনা রুখতে মোদী-মমতার বৈঠক, নয়া মন্ত্র দিলেন নমো

 

নয়াদিল্লি:  দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ দেশের যে দশ রাজ্যে করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি, এদিন সেই ১০ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধম্যে বৈঠক করেন নমো৷ এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ এছাড়াও ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, বিহার, গুজরাত, তেলঙ্গানা এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা।

এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ১০ রাজ্যে করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি৷ ৮০ শতাংশ সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছে এই রাজ্যগুলিতে৷ ফলে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই সকল রাজ্যগুলির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে৷ সারা দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা ৬ লক্ষ ছাপিয়ে গিয়েছে৷ তার মধ্যে অধিকাংশই রয়েছেন এই দশ রাজ্যে৷ এই দশ রাজ্য মিলিতভাবে করোনাকে পরাজিত করতে পারলে, করোনার বিরুদ্ধে বিজয়ী হবে গোটা দেশ৷’’ তাঁর কথায়, এই দশ রাজ্যকে একত্রিত হয়ে এই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে৷ সেই সঙ্গে করোনা মোকাবিলায় রাজ্যগুলির ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ 

আরও পড়ুন- স্বাধীনতা দিবসের পর থেকেই উপত্যকার ফিরছে 4G ইন্টারনেট

তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রতিদিন গড়ে সাত লক্ষ টেস্টিং হচ্ছে৷ প্রতিদিনই টেস্টিং-এর সংখ্যা বাড়ছে৷ ফলে সংক্রমণকে চিহ্নিত করা ও তা মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে৷ অন্যান্য  দেশের তুলনায় আমাদের এখানে মৃত্যুর হার আগেও কম ছিল। যত দিন যাচ্ছে তা আরও কমছে, যা অত্যন্ত সন্তোষজনক। এর থেকে স্পষ্ট যে, আমাদের প্রচেষ্টা সফল হচ্ছে৷  

নমো বলেন, করোনায় মৃত্যুর হার ১ শতাংশেরও নীচে নামিয়ে আনার লক্ষ্য স্থির করেছি আমরা৷ এই লক্ষ্যের উপর আরও বেশি ফোকাস হতে হবে৷ যে সকল রাজ্যে পজেটিভ রোগীর সংখ্যা বেশি এবং টেস্টিংয়ের হার কম, সেখানে টেস্টিং বাড়াতে হবে৷ বিশেষ করে বিহার, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং তেলেঙ্গানার টেস্টিংয়ের সংখ্যা আরও বাড়ানোর উপর জোড় দিয়েছেন নরেন্দ্র মদী৷ 

আরও পড়ুন- গোয়েন্দা সংস্থায় চাকরির নামে দেশজুড়ে প্রতারণা, সতর্কবার্তা কেন্দ্রের

কনটেন্টমেন্ট, কনট্রাক্ট ট্রেসিং এবং নজরদারি করোনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার বলে উল্লেখ করেন নমো৷ তিনি বলেন, কোনও ব্যক্তির শরীরে করোনা ধরা পড়লে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর সংস্পর্শে আসা প্রতিটি ব্যক্তির পরীক্ষা করা গেলে করোনা পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনও ব্যক্তির শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর সংস্পর্শে আসা সকলের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। তাতে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। তাই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সংক্রমিতের সংস্পর্শে আসা সকলকে চিহ্নিত করে পরীক্ষার করতে হবে।’’

আরও পড়ুন- তখনও শরীর ছিল হলুদ! অ্যম্বুলেন্সেও কি জীবিত ছিলেন সুশান্ত? বিস্ফোরক চালক

নমো বলেন, সাধারণ মানুষ থেকে কোভিড যোদ্ধা পর্যন্ত সকলের কাছে ৭২ ঘণ্টার এই ফর্মুলার মন্ত্র পৌঁছে দিতে হবে৷ এছাড়াও আরোগ্য সেতু অ্যাপ থাকতে হবে৷ কনটেন্টমেন্ট জোনকে সম্পূর্ণ আলাদা করে দিতে হবে৷  প্রয়োজনে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন গড়ে তুলতে হবে৷ সমাজের প্রতিটি স্তরে ১০০ শতাংশ স্ক্রিনিং করতে হবে৷

করোনা অতিমারির বিরুদ্ধে কেন্দ্র এবং রাজ্য একজোটে লড়াই চালাচ্ছে বলেও এদিন উল্লেখ করেন প্রধানন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কোভিডের কারণে উদ্ভুত মহামারির বিরুদ্ধে প্রত্যেক রাজ্যই লড়াই করছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে প্রত্যেকের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ। সকলকে এ ভাবেই এক জোটে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। সছিক পথেই এগোচ্ছে দেশ৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four + eighteen =