নয়াদিল্লি: ২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গার পর ঘটনার তদন্তে গঠিত হয়েছিল সিট৷ জেরায় প্রায় ১০০টি প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে৷ কিন্তু একটি প্রশ্নেরও জবাব দেন না তিনি৷ ‘অসম্ভব ঠাণ্ডা’ রেখেছিলেন নিজেকে৷ ৯ ঘণ্টার ম্যারাথন জেরায় তদন্তকারী অফিসাররা তাঁকে চা অফার করলেও, তিন তা গ্রহণ করেননি৷ তিনি আর কেউ নন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ সেই সময় গুজরাতে মুখ্যমন্ত্রীর তখতে ছিলেন তিনি৷ নিজের লেখা নতুন বইতে সেই সময়ের অভিজ্ঞতার কথাই তুলে ধরলেন তদন্তকারী দলের প্রধান অফিসার আরকে রাঘবন৷
আরও পড়ুন- ভোট ময়দানে মহাগাটবন্ধনের হয়ে ব্যাট ধরলেন সোনিয়া, তুলোধোনা নীতীশ সরকারকে
‘এ রোড ওয়েল ট্রাভেলড’ নামক নিজের আত্মজীবনীতে রাঘবন লিখেছেন, তদন্তের স্বার্থে গান্ধীনগরে সিট-এর দফতরে আসতে রাজি হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী৷ সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন নিজের জলের বোতল৷’’ গুজরাত দাঙ্গার তদন্তে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত সিট-এর নেতৃত্ব দেওয়ার আগে সিবিআই প্রধান হিসাবেও কাজ করেছিলেন রাঘবন৷ বোফর্স কেলেঙ্কারি, ২০০০ দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ ফিক্সিং-এর মতো হাই প্রোফাইল ঘটনার তদন্তের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি৷ রাঘবন তাঁর বইয়ে লিখেছেন, “আমরা তাঁর কর্মীদের জানিয়েছিলাম যে তদন্তের স্বার্থে তাঁকে সিট-এর দফতরে এসে দেখা করতে হবে। তবে তিনি চাইলে অন্যদ কোনও জায়গায় এই সাক্ষাৎ হতে পারে। কিন্তু গান্ধীনগরে সিজিও কমপ্লেক্সে সিট-এর দফতরে আসতে রাজি হয়েছিলেন মোদী।”
নিজের বইতে রাঘবন আরও লিখেছেন, ‘‘সে দিন মধ্যাহ্ন ভোজের জন্যআ নমোকে অনুরোধ করেছিলেন তদন্তকারী অফিসাররা। কিন্তু তিনি সেই আর্জিও ফিরিয়ে দেন৷ তাঁকে চাও অফার করা হয়েছিল, তিনি তাতেও রাজি হননি। শুধুমাত্র সঙ্গে আনা নিজের বোতল থেকে জলটুকু খেয়েছিলেন৷ তাঁকে একটু বিরতি নেওয়ার জন্য রাজি করাতে অফিসারদের অনেক অনুনয় করতে হয়েছিল৷’’ তবে ওই দিন গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেননি রাঘবন৷ তাঁর জায়গায় জেরা করেছিলেন সিবিআই অফিসার অশোক মালহোত্রা৷ সাধারণত হাইপ্রোফাইল মামলায় সিবিআই প্রধান নিজেই জেরা করেন। তবে রাঘবন বলেন, তদন্তের নিরপেক্ষতার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ করেছিলেন তিনি৷ যাতে কেউ এই অভিযোগ তুলতে না পারে যে, মোদীর সঙ্গে তদন্তকারী দলের কর্তার রফা হয়ে গিয়েছে!
আরও পড়ুন- উৎসবের মধ্যেই মিলল স্বস্তি, তিন মাসে প্রথম দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা নামল ৩৬ হাজারে
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মাসে গুজরাতের গোধরা স্টেশনের কাছে সবরমতি এক্সপ্রেসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়৷ মৃত্যু হয় ৫৯ জন করসেবকের৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গুজরাতে শুরু হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা৷ প্রাণ হারান ১,১৬৯ জন৷ গত বছর ডিসেম্বরে গুজরাট দাঙ্গা মামলায় মোদীকে ক্নিনচিট দেয় নানাবতী-মেহতা কমিশন। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশই ব্যর্থ ছিল বলে জানায় কমিশন।