অযোধ্যা: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে সরযূর তীরে লেখা হল এক ঐতিহাসিক অধ্যায়৷ সূচনা হল এক স্বর্ণযুগের৷ অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিলান্যাসের পর প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘‘বহু দিনের প্রতীক্ষার সমাপ্তি ঘটল৷ এতদিন তাবুর মধ্যেই মাথা গুঁজে ছিলেন রামলালা৷ এবার তাঁর জন্য সুবিশাল মন্দির গড়ে তোলা হবে৷ বহু শতক ধরে যে ভাঙা-গড়ার খেলা চলে আসছে, আজ রামজন্মভূমি তা থেকে মুক্ত হল।’’
আরও পড়ুন- ২৯ বছর পর ভূমি পূজনে অযোধ্যায় ফিরলেন নমো
দেশবাসী ও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি রামভক্তকে শুভেচ্ছা জানান নমো৷ তিনি বলেন, ‘‘শুধু ভারতে নয়, সারা বিশ্বজুড়ে ধ্বনিত হচ্ছে শ্রীরাম ধ্বনি৷ আজ গোটা দেশ রামময়৷ সারা দেশ রোমাঞ্চিত৷ আজ সারা দেশ ভাবুক হয়ে উঠেছে৷ কোটি কোটি মানুষ এখনও এটা বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না যে, জীবদ্দশায় এই পবিত্র মুহূর্তের সাক্ষী হলেন তাঁরা৷’’ এদিন রামমন্দিরের ভূমিপুজোয় তাঁকে আহ্বান জানানোর জন্য এবং এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য নমো ধন্যবাদ জানান রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টকে৷ তিনি বলেন, আজ সরযূর তীরে এক স্বর্ণঅধ্যায় রচিত হল৷
আরও পড়ুন- রামমন্দির তৈরি হওয়ার আগেই সাজিয়ে ফেলতে হবে মনের অযোধ্যা: মোহন ভাগবত
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এবার রামলালার জন্য সুবিশাল মন্দির নির্মিত হবে৷ দীর্ঘ দিন ধরে যে ভাঙা-গড়ার খেলা চলে আসছে, আজ রামজন্মভূমি তা থেকে মুক্ত হল।’’ আমাদের দেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় বহু মানুষ নিজের সমস্ত কিছু সমর্পণ করে দিয়েছিলেন৷ দাসত্ব থেকে থেকে মুক্তি পেতে ক্রমাগত আন্দোলন চলেছে৷ দেশের এমন কোনও প্রান্ত ছিল না যেখানে স্বাধীনতার জন্য বলিদান দেওয়া হয়নি৷ ঠিক তেমনই রাম মন্দিরের জন্য বহু মানুষ অবিরাম সংগ্রম চালিয়ে গিয়েছেন, বলিদান দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘১৫ অগস্ট যেমন স্বাধীনতার প্রতীক। আজকের দিনটি তেমনই ত্যাগ, সঙ্কল্প ও সংঘর্ষের প্রতীক।’’ যাঁরা রামমন্দির আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের সকলকে সশ্রদ্ধ প্রণামও জানান প্রধানমন্ত্রী৷
আরও পড়ুন- শ্রীরাম যেখানে চরণ রেখেছিলেন, সেখানে রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে: মোদি
নমো বলেন, প্রভু শ্রী রাম আমাদের মনের মধ্যে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন৷ কোনও কাজ করার আগে আমরা ভগবান শ্রীরামেরই স্মরণাপন্ন হই৷ তিনিই আমাদের প্রেরণা৷ আর রামের অদ্ভূত শক্তি দেখুন, ইমারত নষ্ট হয়ে গিয়েছে, রামের অস্তিস্ত নষ্ট করার সবরকম চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু আজও আমাদের মনের মধ্যে রয়েছেন শ্রীরাম৷ তিনিই আমাদের সংস্কৃতির বুনিয়াদ৷ তিনি ভারতের মর্যাদা পুরুষোত্তম৷ নমো বলেন, ‘‘এই রামমন্দির আমাদের সংস্কৃতির আধুনিক প্রতীক। আমাদের রাষ্ট্রীয় ভাবনার প্রতীক। সারা পৃথিবীর মানুষ এখানে আসবেন। এই মন্দিরের মাধ্যমে বর্তমানের সঙ্গে অতীতের যোগসূত্র স্থাপিত হবে। এই মন্দির আগামী প্রজন্মের কাছে আস্থা আর সংকল্পের প্রেরণা হয়ে উঠবে৷’’
তিনি বলেন, এই মন্দির নির্মাণের পর অযোধ্যার অর্থতন্ত্রও বদলে যাবে৷ সারা বিশ্ব থেকে মানুষ এই মন্দির দর্শনে আসবে৷ আজ সারা দেশের মানুষ রামমন্দির নির্মাণে শরিক হয়েছেন। রামের চরিত্রের কেন্দ্র বিন্দু হল সত্যপালন। জীবনের এমন কোনও ক্ষেত্র নেই যেখানে রাম আমাদের কাছে প্রেরণা নন।
আরও পড়ুন- আজ স্বর্ণযুগের সূচনা হল! অযোধ্যায় রামমন্দিরে সূচনা পর্বে কড়া ভাষণ মোদীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বৈচিত্রই আমাদের দেশের বৈশিষ্ট। কাই ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে রামায়ণের ভিন্ন ভিন্ন গাথা রয়েছে। ভারতের বাইরেও বিভিন্ন দেশে রামায়ণ রয়েছে। সর্বত্রই রাম একইভাবে পূজিত হচ্ছেন।’’