৫০ পেরিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে সফল এই ঠাকুমা, কে বলে বয়স বড় বালাই?

৫০ পেরিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে সফল এই ঠাকুমা, কে বলে বয়স বড় বালাই?

শিলং: কথায় বলে বয়স বড় বলাই৷ কিন্তু আত্মিক শক্তির কাছে বয়স নেহাতই তুচ্ছ৷ এই ইচ্ছাশক্তির জোড়েই ৫০ বছরে উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরলেন মেঘায়লের লেকেন্তিও সিয়েমিলিহ৷ 

গত সোমবার প্রকাশিত হয় মেঘালয় বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল৷ এই বছর কৃতীদের নামের তালিকায় ছিল একটি অপ্রত্যাশিত নাম৷ তিনি হলেন ৫০ বছরের লেকেন্তিও সিয়েমিলিহ৷ ৩০ বছর আগে স্কুল ছুটের দলে নাম লিখিয়েছিলেন তিনি৷ এই বয়সে এসে স্কুলে ফিরে যাওয়ার কথা কল্পনা করতে পারেন না অধিকাংশ মানুষই৷ কিন্তু তিনি যে ব্যতিক্রমী৷ তাই তো বয়সকে হার মানিয়েই ফের শুরু করেন পড়াশোনা৷  

মেঘালয়ের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা সিয়েমিলিহ এই বছর সফল ভাবেই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন৷ তবে এখানেই তার সফরের শেষ নয়৷ রয়েছে উচ্চাকাঙ্খা৷ জানা গিয়েছে, পছন্দের খাসি ভাষায় স্নাতক ডিগ্রি করার ইচ্ছা রয়েছে তাঁরা৷ ছেলেমেয়ে নাতি-নাতনি নিয়ে ভরা সংসার সিয়েমিলিহ-র৷ কিন্তু কে বলবে তাঁর বয়স ৫০৷ এখনও তাঁর মধ্যে ভরপুর তারুণ্যের উচ্ছ্বাস! 

এই খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই টুইট করে এক নেটিজেন বলেন, ‘‘স্কুল ছাড়ার ৩০ বছর পর মেঘালয়ের ৫০ বছরের এই মহিলা দ্বাদশের পরীক্ষায় সফল৷ ফলাফল বেরনোর পরের দিনই লেকেন্তিও সিয়েমিলিহ ঠিক করে ফেলেছেন আগামী দিনে আরও পড়াশোনা করবেন তিনি৷ পছন্দের খাসি ভাষায় করবেন স্নাতক ডিগ্রি৷’’ 

রিভোই জেলার বালওয়ান কলেজে ক্লাস করতেন সিয়েমিলিহ৷ তিনিই ছিলেন ক্লাসের প্রবীণ ছাত্রী৷ কিন্তু কেন পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি? এর জন্য অবশ্য অঙ্ককেই দায়ী করেছেন এই ঠাকুমা৷ তাঁর কাছে গণিত ছিল একটা কঠিন বিষয়৷ ভালো করে বুঝতে পারতেন জটিল সমীকরণগুলো৷ তাই ১৯৮৮ সালে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন সংসারে৷ ২০০৮ সালে একটি প্রি-স্কুলে পড়ানোর সুযোগ পান তিনি৷ তারপর থেকেই শেখার প্রতি নতুন করে ভালোবাসা জন্মায় তাঁর মধ্যে৷ ২০১৫ সালে ইগনু থেকে একটি কোর্সও করেন৷ তবে ওই কোর্সে অঙ্ক ছিল না৷ 

উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরনোর পর অত্যন্ত খুশি লেকেন্তিও সিয়েমিলিহ৷ তার সামনে এখন নতুন সুযোগ, নতুন প্রত্যাশা৷ স্বপ্ন যখন তাড়া করে বেরায়, তখন বয়স যে ফিঁকে হয়ে যায়, তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন ৫০ –এর এই ‘তরুণী’৷