নয়াদিল্লি: মারন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে গত ২৪ মার্চ থেকে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন৷ কিন্তু কোনও ভাবেই যেন বাগ মানছে না করোনা৷ সারা দেশে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে কোভিড-১৯ সংক্রমণ৷ সেইসঙ্গে বাড়ছে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য৷ যার জেরে ঝুঁকির মুখে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার সাফাইকর্মী৷
দিল্লি হাসপাতালে ফেলে দেওয়া পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস এবং কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যান্য সামগ্রী মিনিটের মধ্যেই পরিষ্কার করে ফেলছেন কর্মীরা৷ কিন্তু এই বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য থেকে সাফাইকর্মীদের মধ্যে বাড়ছে সংক্রমণের ঝুঁকি৷ নয়া গাইডলাইনে সেন্ট্রাল পলিউশন কনট্রোল বোর্ড (সিপিসিবি)-এর তরফে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য জমা করার জন্য দ্বিস্তরীয় ব্যাগ ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ এই বর্জ্য ভর্তি ব্যাগের উপর লেবেল করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে৷ যাতে সহজেই তা সনাক্ত করেত পারে সেন্ট্রাল বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট ফেসিলিটিস (CWTFs)৷ দিল্লিতে দুটি CWTFs রয়েছে৷ এখানে প্রতিদিন ৬৩ টন বায়োমেডিক্যাল বর্জ্যকে প্রক্রিয়াকরণ করা হচ্ছে৷ দিল্লি পলিউশন কনট্রোল কমিটি (DPCC) জানাচ্ছে, প্রতিদিন রাজধানী দিল্লিতে ২৫ টন বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য তৈরি হয়৷
২০১৯ সালে ‘স্প্রেডিং ইনফেকশন’ নামক একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল Toxics Link৷ দিল্লির ১১টি জেলায় হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে সমীক্ষা চালায় তারা৷ সমীক্ষায় দেখা যায়, পুরসভার বর্জ্যের সঙ্গেই ফেলা হচ্ছে সংক্রমক বর্জ্য৷ যার জেরে অনেকেই DPCC-তে নাম নথিভুক্তই করেনি৷ সমীক্ষায় আরও দেখা যায়, দিল্লিতে শয্যা বিশিষ্ট ২৭.৯ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সামান্য নিডল কাটার পর্যন্ত নেই৷ নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিডল কাটার থাকা বাধ্যতামূলক৷ অন্যদিকে, ৩৪ শতাংশ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ময়লা ফেলার জন্য চাকা লাগানো গাড়ি নেই৷ রোগীদের সামনে দিয়েই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এই সকল বর্জ্য৷ এমনকী হাসপাতালের তরল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে সর্বসাধরনের ব্যবহৃত নর্দমায়৷
কোভিড-১৯ প্যান্ডেমিকের কথা বিবেচনা করে Toxics Link-এর প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর এবং এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রীতি মহেশ বলেন, দিল্লির হাসপাতালগুলিতে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্যের ব্যবস্থাপনায় ঘটতি রয়েছে৷ এই সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন৷ তিনি বলেন, ‘‘কী ভাবে বর্জ্য ফেলতে হবে, সেই বিষয়ে আমাদের নির্দিষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে৷ যা কার্যকর করার দায়িত্ব হাসপাতালগুলির৷’’ সম্ভাব্য যে সকল বস্তু থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, সেগুলি সঠিক পদ্ধতিতে নষ্ট করে দিতে হবে৷ এগুলি সাধারণ বর্জ্যের সঙ্গে মিশে গেলে সাফাই কর্মীদের মধ্যেই সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে৷