ভারতের চিন্তা বাড়াচ্ছে মাসুদ আজাহারের সঙ্গে তালিবান প্রধানের সখ্যতা! বাড়বে জঙ্গি কার্যকলাপ?

ভারতের চিন্তা বাড়াচ্ছে মাসুদ আজাহারের সঙ্গে তালিবান প্রধানের সখ্যতা! বাড়বে জঙ্গি কার্যকলাপ?

নয়াদিল্লি:  মসনদ দখল করেছে তালিবান, আতঙ্কের অন্ধকারে ছেয়ে রয়েছে আফগানিস্তান। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ইস্যুতে দুশ্চিন্তা বাড়ল নয়া দিল্লির। ক্ষমতা দখলের পর আফগান জমিতে সন্ত্রাস রপ্তানি বন্ধ করার আশ্বাস দিয়েছিল তালিবান। কিন্তু, কাবুলে ইসলামিক স্টেট, লস্কর ও জইশ জঙ্গিদের অবাধ প্রবেশ –বিচরণের খবর যদিও অন্য কথাই বলছে।

তালিবানের আফগানিস্তান দখল, নিরাপত্তাজনিত প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল ভারতকে। আশঙ্কা, তালিবানের ক্ষমতায় ফেরাকে কাজে লাগিয়ে আফগানিস্থানের মাটিকে ভারত বিরোধী কাজে ব্যবহার করতে পারে পাকিস্তান। বিশেষ করে, জইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গিগোষ্ঠী-এর ফায়দা তুলতে পারে। তালিবানের বর্তমান রাজনৈতিক শাখা প্রধান আবদুল গনি বরাদরের সঙ্গে জইশ-ই-মহম্মদের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজাহারের দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক সেই পথ আরও প্রশস্ত করবে বলে আশঙ্কা। আজহার-বরাদর সখ্যতার প্রমাণ আগেও একাধিকবার মিলেছে।

১৯৯৯ সালে  জইশ-ই-মহম্মদের প্রতিষ্ঠাতা ও মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী মাসুদ আজহার, মুস্তাক আহমেদ জরগার ও ওমর সইদ শেখের মতো কুখ্যাত জঙ্গির মুক্তির দাবিতে কান্দাহরে বিমান অপহরণ করেছিল তালিবান জঙ্গিরা। বিমানে পণবন্দি ১৯০ যাত্রী উদ্ধারে ভারতীয় কমান্ডোরা যাতে কোনও ‘অপারেশন’ চালাতে না পারে সেই ব্যবস্থা রুখতে IC-814 বিমানের চারিদিকে সাঁজোয়া গাড়ি মোতায়েন রেখেছিল জঙ্গিগোষ্ঠী। একপ্রকার বাধ্য হয়ে ৩ কুখ্যাত জঙ্গিকে মুক্তি দিয়েছিল ভারত। এমনকি মাসুদ আজহারের মুক্তির পর তাঁকে বিমানবন্দরে নিতে এসেছিলেন শীর্ষ তালিবান নেতা মোল্লা আখতার মনসুর।

অন্যদিকে, ২০০৯ এর পরে মার্কিন নিরাপত্তা এজেন্সিগুলি যখন বরাদরকে ধরার জন্য উঠে পরে লাগে, সেই সময় বরাদরকে বাঁচাতে পাকিস্তানের মাদ্রাসায় আশ্রয় দেয় মাসুদ আজহার। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে করাচি থেকে যখন বরাদরকে গ্রেফতার করা হয় সেই সময়-তালিবান নেতা আবদুল গনি বরাদরকে যাতে আমেরিকার হাতে তুলে না দেওয়া হয়, তার জন্য পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর উপর চাপ সৃষ্টি করে মাসুদ। গোপন সূত্রে খবর, কিছুদিন আগেই বরাদরের সঙ্গে আইএসআই কর্তারা সাক্ষাৎ করে। তালিবান যাতে আইএসআই-এর পক্ষে থাকে সেবিষয়ে বরাদরের সঙ্গে কথা বলেন মাসুদ আজহার। মনে করিয়ে দেন, বরাদরের গ্রেফতারির পর আইএসআই তাঁর কথা মতো কীভাবে সাহায্য করেছিল।

এইভাবেই বিপদের দিনে একে অপরকে রক্ষা করে গেছেন দুই জঙ্গিনেতা। সেই কারনেই, আফগানিস্থানের মাটিতে তালিবান শাসন শুরুর সাথে সাথেই ভারতের নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট চাপ বাড়ল বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। মনে করা হচ্ছে, ব্যক্তিগত সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে তালিবান শাসিত আফগানভূমে আবারও শিকড় মজবুত করতে চলেছে ভারত বিরোধ ও পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলি। ভারতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যা উদ্বেগের স্বাভাবিক কারণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *