তিরুবনন্তপুরম: করোনার হাত থেকে মানুষের প্রাণ বাঁচাতে দিনরাত এক করে মাস্ক তৈরি করে চলেছেন আল্লেপির মালা, সীতামারির রেশমি আর দামোর সরিতার মতো মহিলারা৷ একইসঙ্গে এই লকডাউনের মরশুমে মাস্ক তৈরি করে চলছে তাঁদের রুজিরুটি৷
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মাস্ক দেশের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দিতে যৌথ উদ্যোগে কাজ করে চলেছে একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠী, এনজিও এবং স্থানীয় প্রশাসন৷ এই উদ্যোগ শুধুমাত্র মানুষের জীবনই রক্ষা করছে না, এই সংকটের সময়ে একাধিক মহিলার জন্য খুলে দিয়েছে উপার্জনের পথ৷ এই মহিলাদের অধিকাংশই অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক৷ লকডাউনের ফলে কাজ হারিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়েছিলেন তাঁরা৷
কেরলের দারিদ্র দূরীকরণ প্রকল্প কুদুম্বশ্রীর অধীনে ক্ষুদ্র শিল্পে কাজ শুরু করছেন ৩০০ জনেরও বেশি মহিলা৷ ভায়াপুরম গ্রামপঞ্চায়ের এক প্রতিনিধি জানান, এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৪ লক্ষ ৫০ হাজার মাস্ক তৈরি করেছেন এই মহিলা গোষ্ঠী৷ কাপড়ের স্তরের ভিত্তিতে মাস্কের দাম ১০ টাকা এবং ১৫ টাকা করা হয়েছে৷ প্রায় ২ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে এই ক্ষুদ্র শিল্প গোষ্ঠী৷ সরকারের বিভিন্ন দফতর এবং জরুরি পরিষেবা সরবরাহকারীরা মাস্ক তৈরির বিপুল বরাত দিচ্ছে তাঁদের কাছে৷
সেভ দা চিলড্রেনের ডিরেক্টর প্রোগ্রামস অনিন্দিত রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘এই সকল মহিলাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ তাঁদের মাস্ক তৈরির উপাদান সরবরাহ করা হচ্ছে৷ এই উপাদান দিয়েই তাঁরা মাস্ক তৈরি করছেন৷ এই সংকটের সময়ে তাঁরা শুধু মানুষকে পরিষেবাই দিচ্ছে না, দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী এই মহিলাদের কাছে মাস্ক তৈরিই এখন তাঁদের জীবিকা৷’’ আল্লেপির মালা জানালেন, এতদিনে মোট ৮ হাজার মাস্ক বানিয়েছেন তিনি৷ প্রতিদিন প্রায় ২০০টি মাস্ক তৈরি করেন৷ মাস্ক বিক্রি হলে তাঁরা পয়সা পান৷ মালা বলেন, ‘‘আগে পরিবারের জন্য কিছুই করতে পারতাম না৷ এখন পরিবারকে অর্থ দিয়ে সাহায্য করতে পারছি৷’’
একইভাবে মাস্ক তৈরির কাজ করে চলছে অসমের ডিব্রুগড়ে৷ সেভ দা চিলড্রেনের পার্টনার এনজিও ‘সেবা’ এই উদ্যোগে সামিল হয়েছে৷ জেলায় চাহিদার ভিত্তিতে মাস্ক বুনছেন সেখানকার মহিলারা৷ এখনও পর্যন্ত চা বাগানে ৮০০ মাস্ক সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানালেন চৌধুরি৷