যৌনক্ষমতা বর্ধক ট্যাবলেট খেয়ে অকালে প্রাণ হারালেন যুবক! কোন পথে যাচ্ছে যুব সমাজের একাংশ?

যৌনক্ষমতা বর্ধক ট্যাবলেট খেয়ে অকালে প্রাণ হারালেন যুবক! কোন পথে যাচ্ছে যুব সমাজের একাংশ?

নিজস্ব প্রতিনিধি: যৌনক্ষমতা বর্ধক ট্যাবলেট খেয়ে এমন মর্মান্তিক পরিণতি যে হবে, সেটা নাগপুরের এক যুবক ভাবতেও পারেননি। হোটেলে বান্ধবীকে নিয়ে গিয়েছিলেন নিজেদের মতো করে সময় কাটাবেন বলে। একটা সময় উদ্দাম যৌনতার নেশা চেপে বসে যুবকের মাথায়। মদ্যপানের পাশাপাশি ৫০ মিলিগ্রাম ডোজের দুটি ভায়াগ্রা ট্যাবলেট খেয়ে ফেলেন তিনি। তার জেরে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তাঁর বান্ধবী চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা বললেও যুবক কিন্তু রাজি হননি। হয়ত ভেবেছিলেন একটু পরে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। তবে তা হয়নি।

 

পরদিন সকালে অচৈতন্য হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন সেরিব্রোভাস্কুলার হ্যামারেজ হয়ে যাওয়ার কারণেই প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে চিকিৎসকরা এটাও জানিয়েছেন যে প্রেসক্রিপশন ছাড়া এই ধরনের উত্তেজক ওষুধ কখনই খাওয়া উচিত নয়। যাদের শরীরে উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ডোজ বেশি হয়ে গেলে মাথায় অক্সিজেন কম পৌঁছতে পারে। হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। তাই চিকিৎসকদের সাবধানবাণী প্রেসক্রিপশন ছাড়া এমন ট্যাবলেট কখনই খাওয়া উচিত নয়।

 

তবে চিকিৎসকদের সাবধানবাণী উপেক্ষা করেই এই ধরনের ভায়াগ্রা দেদার বিকোচ্ছে দেশজুড়ে। এছাড়া ব্যথা কমানোর জন্য রোগীদের শরীরের অবস্থা বুঝে চিকিৎসকরা স্টেরয়েড মেডিসিন নিতে বলেন। কিন্তু গ্রামেগঞ্জে মুড়ি-মুরকির মতো এগুলি বিক্রি হতে দেখা যায়। প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ওষুধের দোকানগুলি তা বিক্রি করে থাকেন। এর ফলে সবার অজান্তে শরীরের বাঁধছে রোগের বাসা।

 

নাগপুরের ওই যুবকের এমন মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে বলেই বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। তবে এটা আজ আর নতুন কোনও বিষয় নয়। যৌনক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তরুণ থেকে প্রৌঢ়, এমনকী বৃদ্ধদের একাংশ পর্যন্ত ভায়াগ্রার মতো ট্যাবলেট নিয়মিত ব্যবহার করে থাকেন। তাঁদের কেউ হয়ত মারা যাচ্ছেন না, কিন্তু শরীরে এগুলির জন্য কোন কোন রোগ উঁকি মারছে সেটা  জানতে পারছেন না তাঁরা। যখন জানতে পারবেন তখন কিন্তু দেরি হয়ে যাবে। আসলে ভারতে এ বিষয়ে খাতায় কলমে কড়া আইন থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ হয় না বললেই চলে। স্থানীয় প্রশাসন এক্ষেত্রে নীরব দর্শক হয়ে বসে থাকে। আর একশ্রেণির ব্যবসায়ী মুনাফা লোটার জন্য আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই বিক্রি করে চলেছেন ভায়াগ্রার মতো ট্যাবলেট। নাগপুরের ঘটনার পর হয়ত এ বিষয়ে একটু লোকদেখানো তৎপরতা বাড়াবে প্রশাসন। তারপর সব কিছু আগের মতোই হয়ে যাবে। তাই মানুষ সচেতন না হলে এভাবে  জীবনের ঝুঁকি কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 16 =