ভোপাল: করোনা আবহে দেশের পরিস্থিতি এতটাই বেহাল যে, মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে ৩৫ কিলোমিটার হাঁটলেন এক বাবা। কারণ মৃত মেয়ের ময়নাতদন্তের জন্য গাড়ি ভাড়া করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আর্থিক সামর্থ্য নেই তাঁর। আর প্রশাসনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের সিংগ্রিউলি জেলায়। এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে৷
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ১৬ বছরের মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে একটি খাটিয়ায় তুলছেন তার বাবা ও কয়েকজন গ্রামবাসী। সেভাবেই সেটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ৩৫ কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে। পুলিশ সূত্রে খবর, সিংগ্রাউলি জেলার গদাই গ্রামের বাসিন্দা ধীরাপতি সিং গোন্ডের বছর ষোলোর মেয়ে গত ৫ মে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেখানে গিয়ে মৃতের পরিবারকে বলে, ময়নাতদন্তের জন্য দেহ তাদেরই হাসপাতালে পৌঁছে দিতে হবে। আর যে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার কথা হয় সেটি ছিল ধীরাপতিদের বাড়ি থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে। সেই দেহ এতদিন বাড়িতেই পড়েছিল।
কারণ, সেখান থেকে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি ভাড়া করার আর্থিক সামর্থ্য নেই তাঁদের। আর প্রশাসনের তরফে কোনও সাহায্য না পেয়ে একটি খাটিয়ায় মেয়ের দেহ তুলে গ্রামবাসীদের সাহায্যে সেটিকে কাঁধে নিয়েই পায়ে হেঁটে ৩৫ কিলোমিটারের পথ অতিক্রম করতে হয়েছে ওই ব্যক্তিকে। হাসপাতাল পৌঁছতে তাঁদের প্রায় সাত ঘণ্টা সময় লাগে। সেই সময় গ্রামে উপস্থিত কেউ তাঁদের এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন। পরে যা সোশ্যাল মিডিয়া ভাইরাল হয়ে যায়।
ধীরাপতি সিং গোন্ডা সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘আমরা সকাল ৯টায় যাত্রা শুরু করেছিলাম। হাসপাতালে পৌঁছতে বিকেল ৪ টে বেজে যায়। কাঁধে করেই নিয়ে আসি দেহ। এতটা রাস্তা কাঁধে করে এভাবে খাটিয়া বয়ে নিয়ে আসার ফলে আমরাও অসুস্থ বোধ করছি। কিন্তু সাহায্য করার মতো কেউ নেই।’ পুলিশ অফিসার অরুণ সিংয়ের দাবি, দফতরের তরফে এভাবে দেহ নিয়ে আসার জন্য কোনও নিয়ম বা খরচ বরাদ্দ করা হয় না। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ নিয়ে আসা তাই কোনও ভাবেই সম্ভব না।