ভোট ব্যাঙ্ক, ‘তোষণ’ রাজনীতি করছে তৃণমূল, ঘাসফুল উপড়ে পদ্ম ফোটানোর ডাক নাড্ডার

ভোট ব্যাঙ্ক, ‘তোষণ’ রাজনীতি করছে তৃণমূল, ঘাসফুল উপড়ে পদ্ম ফোটানোর ডাক নাড্ডার

 

নয়াদিল্লি: বিজেপি’র প্রদেশ কার্য সমিতির ভার্চুয়াল বৈঠকে আরও একবার তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানালেন বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা৷ সেইসঙ্গে বাংলায় পদ্ম ফোটানোর ডাক দিলেন তিনি৷ 

এদিন নাড্ডা বলেন, ‘‘৫ অগাস্ট বহু প্রতিক্ষিত রাম মন্দিরের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ অথচ ওই দিন বাংলায় লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এটি তাঁর হিন্দু বিরোধী মনোভাবের পরিচয়৷’’ তাঁর দাবি, বাংলায় ভোট ব্যাঙ্ক রাজনীতি করা হচ্ছে৷ হিন্দু বিরোধী মনোভাব তৈরি করা হচ্ছে৷ রাজ্যের মানুষের উন্নয়নের জন্য কোনও চিন্তাভাবনা নেই৷ এখানে গদি বাঁচানোর রাজনীতি হচ্ছে৷ রাজ্যের মানুষকে সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর ডাক দিলেন তিনি৷ 

আরও পড়ুন- মমতা শুধু বলেন, হবে না, করতে দেব না! কী হবে না দিদি? সবই করব: জেপি নাড্ডা

বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল সরকারকে রাজ্য থেকে উৎখাত করতে হবে৷ বাংলায় স্বচ্ছ সরকার আনতে হবে৷ পদ্ম ফোটাতে হবে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটা বুঝে গিয়েছেন, বাংলায় তাঁর পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে৷ বাংলার মানুষ পদ্ম ফোটাতে তৎপর৷

এদিন আরও একবার ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের প্রসঙ্গ তুলে নাড্ডা বলেন, বছরে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা ‘আয়ুষ্মান প্রকল্প’ চালু করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার৷ কঠিন অসুখের সঙ্গে লড়তে গরিব মানুষের জন্য এই প্রকল্প নিয়ে আসা হয়েছে৷ কিন্তু গত তিন বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৪ কোটি ৫৭ লক্ষ মানুষকে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প থেকে বঞ্চিত রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ 

অন্যদিকে ২ হাজার টাকা করে ছ’টি কিস্তিতে কৃষকদের হাতে ১২ হাজার টাকা তুলে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ কিন্তু এখনও দিল্লিকে জানানোই হল না পশ্চিম বাংলায় কতজন কৃষক আছেন৷ যার ফলে বঞ্চিত হতে হচ্ছে বাংলার কৃষকদের৷ একইভাবে প্রধানমন্ত্রীর ফসল বিমাও বাংলায় লাগু হতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাঁর৷ 

নাড্ডা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম বদলে বাংলার আবাস যোজনা করে দেওয়া হয়েছে৷  অর্থ দিচ্ছে কেন্দ্র কিন্তু সিলমোহর লাগানো হচ্ছে তৃণমূল সরকারের৷ আবার প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনাকে বাংলার গ্রামীণ সড়ক যোজনা করা হয়েছে৷ আসলে বাংলার মানুষের সেবা করছেন প্রধানমন্ত্রী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়৷ বাংলার মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে৷ 

আরও পড়ুন- এক দিনে করোনার কোপে ৯৫ হাজার, দৈনিক আক্রান্তের নিরিখে রেকর্ড করল ভারত

তিনি আরও জানান, স্বচ্ছ ভারত অভিযানে প্রথমে অংশই নিতে চায়নি বাংলা৷ দেশের সবচেয়ে নোংরা ১০টি শহরের মধ্যে আটটিই বাংলার৷ সব বিষয়েই অসহযোগিতা করেছে তৃণমূল সরকার৷ কিন্তু তাঁর দাবি, এবার ভোটে বাংলার ভাগ্য বদলাবে৷ বাংলার বিকাশও হবে৷ 

করোনা ইস্যুতে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়ান জেপি নাড্ডা। তাঁর দাবি, করোনা যোদ্ধাদের সঙ্গে অবিচার করছেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনা যোদ্ধার মৃত্যু হলে ৫০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ কিন্তু বাংলায় এই সুবিধা থেকেও বঞ্চিত রাখা হয়েছে কোভিড যোদ্ধাদের৷ পরিযায়ী শ্রমিকদেরও রাজ্যে ফেরাতে বাধা দিয়েছিলেন তিনি৷ শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনকে করোনা এক্সপ্রেস বলে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি৷ 

রবীন্দ্রভারতীর পাঁচিল ভাঙচুরের ঘটনাতে এদিন রাজ্য সরকারকে একহাত নেন নাড্ডা। তিনি বলেন, “রবীন্দ্রনাথ কী ভেবেছিলেন। আর বাংলায় কী হচ্ছে। রবীন্দ্রভারতীতে ভাঙচুরের ঘটনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মাও কাঁদছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − fifteen =